বাংলা সংগীতের ‘যুবরাজ’ খ্যাত কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের সঙ্গীত জীবন শুরু হয় ফিতার ক্যাসেটের যুগে। ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ অ্যালবাম দিয়েই তিনি দেশের মানুষের কাছে পরিচিতি পান।
শুধু পরিচিতি নয়, এই প্রথম অ্যালবামেই দেশের সঙ্গীত মহলে ঢেউ তোলেন। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে আসিফ আকবর ভক্ত-অনুরাগীদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য গান, আর দর্শকরা তাকে ভালোবাসা দিয়েছেন।
যদিও গানের মানুষ হিসেবে তিনি সুপরিচিত, আসিফ আকবরের কৈশোরে স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হওয়ার। স্কুলজীবন থেকেই তিনি কুমিল্লা জিলা স্কুল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে আন্তঃকলেজ ক্রিকেটে অংশ নেন এবং অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
নব্বই দশকের শুরুতে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগে ইয়ং পেগাসাসের হয়ে খেলেছেন। তবে গানের প্রতি আকর্ষণ আর ক্রমশ সঙ্গীত জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি ক্রিকেটে পেশাদার হতে পারেননি।
মহানুভব ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক এখনও বজায় রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আসিফ আকবর জানিয়েছেন, কুমিল্লার খেলাধুলার ঐতিহ্য একসময় ছিল অসাধারণ। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি—সব খেলায় কুমিল্লার প্রতিনিধিত্ব ছিল।
কিন্তু ঢাকার কাছের এই জেলা আজকাল অনেক পিছিয়ে। বিশেষ করে ৬ বছর ধরে ক্রিকেট লীগ চলেনি। তিনি বলেন, “বিসিবির পরিচালক হিসেবে আসার সুযোগ পেলে প্রথম লক্ষ্য হবে কুমিল্লার ক্রিকেটকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, যাতে জাতীয় পর্যায়ে আমাদের প্রতিনিধিত্ব থাকে।”
আসিফ আকবর মনে করেন, জেলা ও বিভাগের নির্বাচিত বিসিবি পরিচালকরা প্রায়ই নিজের এলাকার খেলাধুলার উন্নয়নে নজর দেন না। কিন্তু তিনি ব্যতিক্রম হতে চান। তিনি বলেন, “কুমিল্লার ছেলেমেয়েরা এখন মাঠমুখী নয়। মাদক ও কিশোর গ্যাং ভয়ঙ্কর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসবের মূল কারণ হলো খেলার জায়গার অভাব। আমরা স্টেডিয়াম ভাড়া দিই ঢাকার ক্লাবের জন্য, কিন্তু স্থানীয় প্রতিভাদের সুযোগ নেই। আমি চেষ্টা করব মাঠে খেলা ফিরিয়ে আনতে।”
কুমিল্লা ছাড়াও নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সহ চট্টগ্রাম বিভাগের অন্যান্য জেলায় ক্রিকেট প্রতিভা আছে। আসিফ আকবর মনে করেন, প্রতিটি জেলা ক্রিকেটের উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনার জায়গা রয়েছে।
আসিফ নিজে মূলত কাউন্সিলর হওয়ার আগ্রহী ছিলেন না। তবে কুমিল্লার সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার ও সংগঠকদের অনুরোধে তিনি দায়িত্ব নেন। তিনি বলেন, “ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের প্রতি আমার সবসময়ই আবেগ কাজ করে। নিজে খেলেছি, খেলাটাকে ভালোবাসি। এজন্যই আমি শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলর পদে আগ্রহী হয়েছি।”
আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য বিসিবি নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ই-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবেন আসিফ। তিনি জানিয়েছেন, “এখানে আমার টানা ১৪টি শো আছে। গান আমার পেশা, তাই ভোটও এখান থেকে দেব।”
জানা গেছে, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিসিবির পরিচালক পদের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে এবং রোববার জমা দিতে হবে।