প্রয়াত সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গের মৃত্যু তার অসাধারণ জনপ্রিয়তা ও ‘জনতার তারকা’ খেতাবকে আরও একবার প্রমাণ করে দিল। সিঙ্গাপুরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে আকস্মিকভাবে মারা যান তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) তার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
জুবিন গার্গের আকস্মিক মৃত্যুর খবরটি কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত সমস্ত ভক্তদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রিয় শিল্পীর অকাল প্রয়াণ ভক্তরা মেনে নিতে পারছেন না। তার মৃত্যুর পর নেটদুনিয়ায় প্রশ্ন, কল্পনা ও ধোঁয়াশার উদ্রেক হয়েছে।
আসাম সরকার ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে, যা সব শ্রেণি, ধর্ম ও পেশার মানুষকে স্পর্শ করেছে। মৃত্যুর আগে লেখক ও উপন্যাসিক রীতা চৌধুরীর সঙ্গে শেষ পডকাস্টে জুবিন গার্গ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন—“আমি যদি আসামে মারা যাই, আসাম সাত দিন থমকে যাবে।” এই কথাই তার মৃত্যুর পর সত্য প্রমাণিত হলো।
জুবিনের শেষযাত্রায় আসামের মানুষের অগাধ ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা তাকে বিদায় জানিয়েছে। মুম্বাইয়ের বিলাসবহুল জীবন তাকে কখনো টানেনি। হৃদয়ে তার আসামের প্রতি ছিল বিশেষ আবেগ। পডকাস্টে তিনি স্মরণ করেছিলেন, মুম্বাইয়ে কাটানো ১২ বছর শহুরে জীবনের বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা ছিল। জুবিনের কথায়, “রাজা কখনো নিজের রাজ্য ছেড়ে যায় না। মুম্বাইয়ে রাজা নেই। লতা মঙ্গেশকর বা রাজেশ খান্নার মৃত্যু সংবাদ হয়ে গেলেও কোনো বিশাল প্রভাব হয়নি, কিন্তু আমি যদি আসামে মারা যাই, আসাম সাত দিন থমকে যাবে।”
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গত মঙ্গলবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। গুয়াহাটির ভোগেশ্বর বড়ুয়া স্পোর্টস কমপ্লেক্সে প্রথমে ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বিপুল ভিড় সামলানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী স্টেডিয়াম সারারাত খোলা রাখার নির্দেশ দেন।
জুবিনের সিঙ্গাপুরের নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভালে ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর পারফর্ম করার কথা ছিল, কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগেই তিনি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। জানা গেছে, তার মৃগী রোগের ইতিহাস ছিল এবং স্কুবা ডাইভিং করার সময় তিনি জলরোধে নিহত হন। তবে আসল মৃত্যুর কারণ জানার জন্য তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্র: এনডিটিভি