ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন দশক পর নতুন করে দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা, যা আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছে এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে।
২৯ বছর পর রমনা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে, পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মামলার তালিকায়।
গত ২১ অক্টোবর দায়ের হওয়া এ মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক, তার শাশুড়ি লতিফা হক লুচি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, চলচ্চিত্রের খলনায়ক মো. আশরাফুল হক ওরফে ডনসহ আরও কয়েকজন। এছাড়া বিএফডিসি এলাকার তিনজন—ডেভিড, জাভেদ ও ফারুককেও আসামি করা হয়েছে। আরও রয়েছেন ফরিদপুরের রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, রুবী, আ. ছাত্তার ও সাজু নামের চারজন।
মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৩ অক্টোবর আদালতের শুনানিতে প্রথমবারের মতো উপস্থিত হয়েছিলেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক। এক সপ্তাহ পর আদালতের নির্দেশেই হত্যা মামলা দায়ের হয় রমনা থানায়।
প্রশ্ন উঠেছে—এখন আসামিরা কোথায়? জানা গেছে, আজিজ মোহাম্মদ ভাই দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশে অবস্থান করছেন। রেজভী আহমেদ রয়েছেন লন্ডনে। অন্যদিকে সামিরা হক, তার মা লতিফা হক লুচি ও অভিনেতা ডন মামলার আগে পর্যন্ত দেশে থাকলেও মামলা দায়েরের পর থেকে তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তবে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করবেন আসামি সামিরা হক। তার বর্তমান স্বামীও এদিন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেছেন জামিন শুনানির প্রস্তুতি নিয়ে। অন্য আসামিদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত তথ্য জানাতে পারেনি পুলিশ।
এই মামলার তদন্ত এখন রমনা থানার ইন্সপেক্টর আতিকুল আলম খান্দকারের নেতৃত্বে চলছে। তিনি বলেন, “নতুন করে তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। আসামিদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
তিনি আরও জানান, আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য ইমিগ্রেশনে মামলার তথ্য পাঠানো হয়েছে।
এর আগে এই মামলার তদন্ত করেছে চারটি সংস্থা—রমনা থানা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি এবং পিবিআই। প্রত্যেকটি সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনেই সালমান শাহর মৃত্যু ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক ইমদাদুল হক পরিচালিত জুডিশিয়াল তদন্তেও একই মত উঠে আসে।
তবে নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের হওয়ায় বিষয়টি আবারও নতুন মোড় নিয়েছে, যা হয়তো দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে নতুন দিক উন্মোচন করবে।































