নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। বৈঠকে গাজায় ইসরায়েল-হামাস সংঘাত বন্ধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ট্রাম্প নিজেই এটিকে তার “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক” বলে অভিহিত করেছেন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বৈঠকের শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে ট্রাম্প বলেন, “আমরা গাজার যুদ্ধ শেষ করতে চাই এবং এটি শিগগিরই শেষ করতে পারি।” তিনি আরও বলেন, “এই বৈঠক আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা এমন কিছু শেষ করতে যাচ্ছি যা সম্ভবত কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের নেতারা। ট্রাম্প জানান, বৈঠকে ইসরায়েল ছাড়া সব বড় শক্তি উপস্থিত ছিলেন, তবে আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে তিনি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন। ট্রাম্প ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণের প্রশংসা করেন, যেখানে সুবিয়ান্তো বলেন যে শান্তির জন্য ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বৈঠকের পরে ট্রাম্প কোনো মন্তব্য না করে কেবল হাত নাড়েন, এবং হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বৈঠক কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেন। প্রত্যাশা করা হচ্ছিল, ট্রাম্প ও উইটকফ গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন, যা সাম্প্রতিক সময়ে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার তৈরি করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বৈঠককে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, বৈঠক থেকে একটি যৌথ ঘোষণা প্রকাশ করা হবে। এরদোয়ান গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তুরস্ক ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য স্থগিত করেছে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াম (WAM) জানিয়েছে, বৈঠকে গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ করে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে মানবিক সংকট মোকাবিলার পদক্ষেপও আলোচিত হয়েছে।