বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ডিমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি এমন একটি খাবার, যাতে রয়েছে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম,
কোলিন এবং নানা প্রয়োজনীয় ভিটামিন—যা শিশুর মস্তিষ্ক, হাড় ও সামগ্রিক বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। তবে সব ধরনের ডিম সমান নয়; কোন ডিম শিশুর বয়স ও স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, তা জানা জরুরি।
দেশি মুরগির ডিম
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশি মুরগির ডিমই শিশুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও পুষ্টিকর।
-
এতে প্রচুর প্রোটিন, ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোলিন ও ক্যালসিয়াম থাকে।
-
কোনো হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয়।
-
নিয়মিত খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
উপযুক্ত বয়স: ৭ মাসের পর থেকে কুসুম দিয়ে শুরু করা যায়; পরে ধীরে ধীরে সাদা অংশ দেওয়া যেতে পারে।
কোয়েলের ডিম
কোয়েলের ডিম আকারে ছোট হলেও এতে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এতে আয়রন, ভিটামিন বি–১২, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম থাকে, যা শিশুর রক্ত ও মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। এটি তুলনামূলকভাবে সহজে হজম হয়।
তবে কিছু শিশুর ক্ষেত্রে কোয়েলের ডিমে অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকতে পারে, তাই প্রথমে অল্প পরিমাণে খাওয়ানো উচিত।
উপযুক্ত বয়স: ৮ মাসের পর সিদ্ধ করে কুসুম দিয়ে শুরু করা ভালো।
ব্রয়লার মুরগির ডিম
বাজারে সহজলভ্য ও সস্তা হলেও ব্রয়লার ডিম সবসময় শিশুদের জন্য সেরা নয়।
-
এতে প্রায় ১১ ধরনের খনিজ উপাদান ও ৪০ ক্যালরির মতো শক্তি থাকে।
-
কিন্তু অনেক সময় হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে এগুলো পুরোপুরি নিরাপদ থাকে না।
-
রোদে কম থাকার কারণে এতে ভিটামিন–ডি’ও তুলনামূলকভাবে কম।
হাঁসের ডিম
হাঁসের ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি হলেও কোলেস্টেরলের মাত্রাও বেশি। ফলে এটি ছোট শিশুর জন্য হজমে ভারি হতে পারে।
উপযুক্ত বয়স: ২ বছর বয়সের পর অল্প পরিমাণে দেওয়া যেতে পারে।
বিশেষ পরামর্শ
-
শিশুকে সবসময় ভালোভাবে সিদ্ধ করা ডিম দিন।
-
প্রথমবার অল্প পরিমাণে দিন এবং অন্তত তিন দিন পর্যবেক্ষণ করুন, অ্যালার্জি হচ্ছে কি না।
-
কুসুম দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে সাদা অংশ দিন।
-
পুষ্টি ও নিরাপত্তার দিক থেকে দেশি মুরগির ডিমই বাচ্চার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ডিম খাওয়ালে শিশুর শরীর ও মস্তিষ্ক আরও সুস্থভাবে বিকশিত হবে।































