ছেলে-মেয়ে বিয়ে দিতে চরম বিপাকে মরা ঘাঘট নদীর দ্বীপচরের মানুষ
Published : ০১:০৮, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
সন্তানদের বিয়ে দিতে চরম বিপাকে পড়তে হয় তাদের। এমন পরিস্থিতি নিয়েও মরা ঘাঘট নদীর দ্বীপে বসবাস করছেন একাধিক পরিবার। নেই তাদের চলাচলের রাস্তা।
অন্যের জমির আইল দিয়ে দু’শত মিটার হেঁটে উঠতে হয় প্রধান সড়কে। মাঝখানে আবার বিশাল খাল। সেই খাল পারাপারে একমাত্র ভরসা ড্রামের ভেলা।
সবমিলিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই দ্বীপচরের মানুষদের। আধুনিক যুগের স্মাট যুবরা সেই চরের সন্তানদের সঙ্গে বিয়ে করাতে নারাজ অনেকে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ভেঙে যায় ঠিকঠাক হওয়া অনেক বিয়ে। ফলে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে অনেকটা বেগ পেতে হয় বলে জানান পুরান লক্ষ্মীপুর দ্বীপের বাসিন্দারা। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর-পুরান লক্ষ্মীপুর এলাকায় দেখা যায়, বকশীরদহর পানির ওপর দিয়ে ড্রামের ভেলায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ নারী-পুরুষ।
এমন দুর্ভোগই তাদের নিত্যসঙ্গী বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। জানা যায়, উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর ঘেঁষে একটি গ্রামের নাম পুরান লক্ষ্মীপুর। একসময় এর পাশ দিয়ে বয়ে যেত ঘাঘট নদী। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সৃষ্টি হয় মরা নদীতে।
এখন এটি বকশীরদহ নামে অনেকের কাছে পরিচিত। বকশীরদহর ওপার ঘেঁষে দ্বীপে বসবাস করেন বেশ কিছু পরিবার। তারা যুগযুগ ধরে বসবাস করে আসলেও তাদের নেই রাস্তাঘাট। সেই সঙ্গে বকশীরদহর পানির ওপর দিয়ে চলাচল ছাড়া নেই কোনো বিকল্প রাস্তা।
নিত্যদিন ড্রামের ভেলা দিয়ে চলতে হয় তাদের। ভেলায় ওপারে পৌঁছে হেঁটে যেতে হয় জমির আইল দিয়ে। এতে করে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ। আসলাম হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, শুধু সেতু নয়, নেই রাস্তাঘাট।
ভেলায় ওপারে পৌঁছে অন্যের জমির আইল দিয়ে খানিকটা হেঁটে সড়কে উঠতে হয়। সেতুসহ রাস্তা নির্মাণের দাবি করেন তারা। দ্বীপচরের রবিউল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনের তাগিদে যাওয়ার জন্য ড্রামের ভেলাই তাদের ভরসা। একটি সেতু ও রাস্তার অভাবে দীর্ঘযুগের ভোগান্তি তাদের। জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে কোনো সুফল হয়নি।
এমন পরিস্থিতি থাকায় এই দ্বীপের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে করাতে অনেকটা বেগ পেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঠিকঠাক হওয়া বিয়ে ভেঙে যায়। বর্ষা মৌসুমে খাল পারপারে নিজেদের টাকায় বানানো হয় বাঁশের সাঁকো বা ড্রামের ভেলা।
এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। বকশীরদহ খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জয়েনপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, বকশীরদহ খালের ওপারে শতাধিক হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে।
সেখানে শাক-সবজি-ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। ওইসব ফসল পরিবহন করা খুবই কষ্টসাধ্য। এতে করে কখনো কখনো উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা বলেন, তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
বিডি/এএন


































