বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত ২

Published : ১৪:২৭, ১০ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের তারাগঞ্জে ভ্যানচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে উপজেলার বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরের রূপলাল দাস (৪০) এবং মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। সম্পর্কে তারা ভাগনি জামাই ও শ্বশুর।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করতে সেদিন রাতেই প্রদীপ দাস ভ্যান চালিয়ে রূপলালের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথ না চিনে সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় পৌঁছে রূপলালকে ফোন করলে তিনি সেখানে যান, পরে তারা রিকশায় ঘনিরামপুরের দিকে রওনা হন।
রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় কয়েকজন তাদের ভ্যানচোর সন্দেহে আটক করেন। এ সময় প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা একটি বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের বোতল বের হয়। একটি বোতল খুলে ভেতরের তরলের ঘ্রাণ নিতে গিয়ে দুই স্থানীয় বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়েন, ফলে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়।
পরে তাদের অজ্ঞান করে বটতলা থেকে বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে চিকিৎসক রূপলাল দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আজ ভোরে তিনি মারা যান।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, “গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”