আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক আইজিপি মামুনের বিস্ফোরক জবানবন্দি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক আইজিপি মামুনের বিস্ফোরক জবানবন্দি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৭:৫৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জেরা দিতে গিয়ে বলেছেন, পুলিশে গোপালগঞ্জ-সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চাপা দিতে তার অনীহা থাকা সত্ত্বেও তাকে আবারও আইজিপি করা হয়েছিল। নিয়মিত চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চুক্তিভিত্তিকভাবে দু’দফা সময় বাড়ানো হয় প্রথমবার তিনি সম্মত থাকলেও দ্বিতীয় বর্ধিতকরণে আর রাজি ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে মানবতাবিরোধী অপরাধের এক মামলায় আসামি থেকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীতে পরিণত হওয়া এই সাবেক পুলিশপ্রধান জেরায় এমন বক্তব্য দেন।

জেরায় তিনি জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী রাতের আঁধারে ব্যালট বাক্সে প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট ভরার বিষয়টি নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এমন কথা তিনি শুনেছেন। মাঠপর্যায়েও রাতেই ভোট দেওয়ার নির্দেশনা যায় বলে দাবি করেন তিনি। তার ভাষ্য, রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা ও ভূমিকার পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, ডিসি-ইউএনও-এসিল্যান্ড, এসপি ও থানা ওসিরা এতে মূল ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে বিপিএম–পিপিএম পদক দেওয়ার ক্ষেত্রেও নির্বাচন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় পুলিশ কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হতো; তিনিও নির্বাচন-পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে মোট তিনটি বিপিএম–পিপিএম পেয়েছিলেন, যদিও কেন পেয়েছেন  এ মুহূর্তে নিশ্চিত নন।

রাজনীতির প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৮–এর পর থেকে পুলিশ বাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আরও বেড়ে যায়। কয়েকজন কর্মকর্তা ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে পরিচিতি পান এবং বাহিনীর চেইন অব কমান্ড পাশ কাটিয়ে প্রায় প্রতি রাতেই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় বৈঠকে যেতেন। তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত থাকতেন না এবং সংশ্লিষ্টদেরও না যেতে নিষেধ করলেও তারা কথা শোনেননি।

আইজিপি নিয়োগ ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রসঙ্গে মামুন জানান, সততা ও দক্ষতার মূল্যায়নে তাকে আইজিপি করা হয়েছিল। বাহিনীর সুনাম রক্ষা ও প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব আড়াল রাখতে পরবর্তীতে তাকে দু’বার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রথম দফায় রাজি থাকলেও দ্বিতীয়বার তিনি অনাগ্রহ প্রকাশ করে পরের ব্যাচ থেকে আইজিপি নিয়োগের কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে মৌখিকভাবে জানান। তারপরও গ্রুপিং ঢাকতে তাকে দ্বিতীয় দফায়ও মেয়াদ বাড়ানো হয়।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement