হাদি হত্যা: শুটার ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকে ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন

হাদি হত্যা: শুটার ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকে ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:১৪, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের ইঙ্গিত মিলেছে। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব বিশ্লেষণ করে সিআইডি ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের চিত্র উঠে এসেছে।

এই প্রেক্ষাপটে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী ফয়সাল করিম মাসুদসহ তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচার সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডি।

আবু তালেব জানান, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনও গ্রেপ্তার না হলেও মামলার আলামত গোপন এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অভিযানের সময় বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার হওয়ায় সেগুলোর তথ্য গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষণ শুরু করে সিআইডি।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের একাধিক চেকবইয়ে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থের উল্লেখ রয়েছে। যদিও এসব চেকের চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন হয়নি, তবুও এসব রেকর্ডের সম্মিলিত অঙ্ক প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে যে, অভিযুক্ত এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে। এই লেনদেন মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিআইডি জানায়, বিষয়টি আমলে নিয়ে অর্থপাচার সংক্রান্ত তদন্ত জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা দ্রুত রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া এসব অর্থের মূল উৎস ও সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার কাজও চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী চক্র সক্রিয় ছিল কি না, সে বিষয়েও সিআইডির একাধিক টিম সমন্বিতভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার এবং পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement