ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিতে আহত করার ঘটনায় নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর দিয়ে রিকশায় যাওয়ার সময় হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
ঘটনার সময়কার একটি নিকটবর্তী ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে—দুপুর ২টা ২০ মিনিটে গুলির শব্দ শোনা যায় এবং মাত্র কয়েক সেকেন্ড পর দুই যুবককে মোটরসাইকেলে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করতে দেখা যায়। গুলির শব্দে আশপাশের পথচারীরা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন।
পুলিশের কাছে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রকাশিত দুটি স্থিরচিত্র বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, হামলাকারী দুজনের পোশাক ছিল–
একজনের গায়ে ছিল কালো পাঞ্জাবি, কালো মাস্ক, গলায় চাদর ও আকাশি রঙের প্যান্ট।
অন্যজনের গায়ে ছিল কালো ব্লেজার, কালো মাস্ক, চোখে চশমা এবং পায়ে চামড়ার রঙের জুতা।
প্রাথমিক ধারণা, এই দুই ব্যক্তি হামলার আগেই মতিঝিল ওয়াপদা মাদরাসা (জামিআ দারুল উলুম মতিঝিল) এলাকায় হাদীর সঙ্গে জনসংযোগে অংশ নিয়েছিল, যেহেতু ফুটেজে থাকা পোশাকগুলো তাদের জনসংযোগের সময়কার পোশাকের সঙ্গে মিলে গেছে।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, আশপাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলছে। ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করা হলে হামলায় কতজন যুক্ত এবং কারা জড়িত সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
এর আগে দুপুরে নির্বাচনী প্রচারণার মাঝেই বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় হাদিকে খুব কাছ থেকে মাথা লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ পড়া শেষে মতিঝিল দিক থেকে একটি কালো মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি এসে হঠাৎ তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, ওসমান হাদির মস্তিষ্কে গুলি লেগেছে। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে এবং জরুরি অস্ত্রোপচার চলছে।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসেই হাদি জানিয়েছিলেন যে দেশি-বিদেশি মোট ৩০টি নম্বর থেকে তিনি হত্যার হুমকি পেয়েছেন। ১৪ নভেম্বর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেছিলেন, তিন ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন বিদেশি নম্বর থেকে তাকে হত্যা, বাড়িতে আগুন লাগানো এবং তার মা–বোন–স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছিলেন, এসব হুমকি তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার লক্ষ্যেই দেওয়া হয়েছিল।



























