মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে এবং তার মাথার ভেতরে এখনও গুলি রয়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পর হাদির বোন মাহফুজা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ আমার ভাইকে কখনই বাঁচতে দেবে না। আমার ভাইয়ের ওপর যারা গুলি চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাই ভারত-বিরোধী ও বাংলাদেশকেন্দ্রিক নানা বিষয়ে লেখালেখি করে। দেশের প্রতি তার গভীর অনুরাগ রয়েছে। এ কারণেই তাকে নিয়ে আমি গভীর আতঙ্কে আছি। আমি চাই না সে আর বাংলাদেশে থাকুক; তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেব। ভারতের র, আওয়ামী লীগ—কেউই তাকে নিরাপদে থাকতে দেবে না।
এদিকে, হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে ঝালকাঠিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে জুলাই আন্দোলনের সমমনা রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দেন।
অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীরা শনাক্ত ও গ্রেপ্তার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তাদের দাবি—এ হামলা পূর্বপরিকল্পিত, তাই দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।
এনসিপির ঝালকাঠি জেলা সমন্বয়ক মাইনুল ইসলাম মান্না বলেছেন, যদি দোষীদের গ্রেপ্তার না করা হয়, তাহলে শনিবার বিকেল ৪টায় শহরের কলেজ মোড় এলাকায় ফের সড়ক অবরোধ করা হবে। জনদুর্ভোগ বিবেচনায় আজকের কর্মসূচি শেষ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় শরিফ ওসমান হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে দুই মোটরসাইকেল আরোহী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল দিক থেকে কালো রঙের মোটরসাইকেলটি আসে। পিছনে বসা ব্যক্তি কাছ থেকে হাদির মাথায় গুলি করেন এবং মুহূর্তেই তারা দ্রুতগতিতে সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা হাদিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, হাদির মাথায় সরাসরি গুলি লেগেছে এবং তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে এবং অস্ত্রোপচার চলছে।
গত নভেম্বরেও ওসমান হাদি বিভিন্ন নম্বর থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন, তিন ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৩০টি বিদেশি নম্বর থেকে তাকে কল ও মেসেজ দিয়ে হত্যা, পরিবারকে নির্যাতন ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তার ভাষায়, আওয়ামী লীগের ‘খুনিরা’ তাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে এবং তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনায় রয়েছে।



























