বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, তিনি আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন।
তবে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) নিজেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
তারেক রহমান কোন ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন—এই তথ্য চূড়ান্ত হওয়ার পরই ওই ফ্লাইটের টিকিট সংগ্রহ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দেয়। দলীয় সূত্র জানায়, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই টিকিটগুলো বিক্রি হয়ে যায়।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, লন্ডন সময় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (বিজি-২০২) হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন তারেক রহমান। ওই ফ্লাইটে তার সঙ্গে বিএনপির অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী থাকবেন। বাংলাদেশ সময় ২৫ ডিসেম্বর সকালে তার ঢাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
দলীয় সূত্র আরও জানায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে অনেক নেতাকর্মী একই ফ্লাইটে টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আগ্রহ বেশি থাকায় খুব দ্রুত সব আসন পূর্ণ হয়ে যায়।
এদিকে দেশে ফেরার সময় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ভিড় না করার জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক রহমান। লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, তিনি প্রায় ১৮ বছর যুক্তরাজ্যে কাটিয়েছেন এবং ইনশাআল্লাহ আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যাচ্ছেন।
বিমানবন্দরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা হট্টগোল না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এয়ারপোর্টে ভিড় হলে তা অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এতে সবাই বাংলাদেশি—এমন একটি বার্তা যাবে, যা দেশের এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে। তাই সেদিন কেউ যেন বিমানবন্দরে না যান, সে অনুরোধও জানান তিনি।
তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে তার বাসভবন ও কার্যালয়ের সংস্কারকাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাড়ির দেয়ালে নতুন সাদা রং করা হয়েছে, নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতারের বেড়া ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বক্স স্থাপন করা হয়েছে। ছোট গেট পরিবর্তন করে বড় গেট লাগানো হয়েছে এবং ভেতরের সংস্কারকাজও শেষের দিকে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন জানান, গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি প্রায় প্রস্তুত। কোনো কারণে সেটি পুরোপুরি প্রস্তুত না হলে পাশের বাসা ‘ফিরোজা’-তে উঠবেন তারেক রহমান। দেশে ফিরে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয় থেকেই নিয়মিত অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
তিনি আরও জানান, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও বাবার সঙ্গে দেশে ফিরতে পারেন।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আর দেশে ফিরতে পারেননি।































