রাইডশেয়ারিং খাতে অস্থিরতা: অননুমোদিত গ্রুপের হামলা ও অফিসে তালা লাগানোর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে

রাইডশেয়ারিং খাতে অস্থিরতা: অননুমোদিত গ্রুপের হামলা ও অফিসে তালা লাগানোর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ২২:৩৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানীতে রাইডশেয়ারিং অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবার উপর আবারও সংগঠিত ও অননুমোদিত কিছু গোষ্ঠীর হামলা, ভাংচুর ও অফিসে তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর ২০২৪ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর রাইডার নামধারী সহিংস দুষ্কৃতকারীরা আক্রমণ করে পাঠাও লিমিটেড এবং উবার বাংলাদেশের বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর, অফিসে তালা লাগিয়ে দেয়।

এরপর ২০২৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিআরটিএর মূল কার্যালয়ে জড়ো হয়ে তারা রাইডশেয়ারিং কোম্পানির প্রতিনিধিদের হামলা করে এবং দিনব্যাপী জিম্মি করে রাখে।

শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী এসে রাইডশেয়ারিং কোম্পানির প্রতিনিধিদের উদ্ধার করতে হয়। কিন্তু কোম্পানিসমূহের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও বিআরটিএ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ আইনিব্যবস্থাগ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।

এভাবে, বিআরটিএর দায়িত্বহীন তারা প্রশ্রয়ে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আন্দোলনের নামে পুরো রাইডশেয়ারিং খাতে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এ বছরও একই পদ্ধতিতে তারা অফিসে তালা লাগানোর চেষ্টা করেছে এবং বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর করেছে।
 
একাধিক অনিবন্ধিত গ্রুপ সক্রিয় – উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ, যে গ্রুপগুলো এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- 
●    বাঁচাও রাইড পরিষেবা ঐক্য পরিষদ ইউনিয়ন 
●    অ্যাপ বেইজড ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন (ATU)
●    রাইড শেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়ন (RSDU)
●    বাংলাদেশ রাইড সার্ভিস ইউনিয়ন (BRDU)
অভিযোগ রয়েছে, এই গ্রুপগুলোর কোনো আইনি নিবন্ধন, অনুমোদিত কাঠামো বা সঠিক সদস্যভিত্তিক সংগঠন নেই, তবুও তারা রাইডশেয়ারিং খাতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। এই গ্রুপগুলোর সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক ফেসবুক গ্রুপ ও মেসেঞ্জার চ্যানেলের মাধ্যমে। এসব ঘটনায় যাদের নাম বারবার উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে:
●    মোঃ আসাদুজ্জামান – ০১৮৭৫১৯৭২৭৯ – ঢাকা মেট্রো GA ২৫-৮৪৭৮
●    মোঃ আব্দুস সাত্তার লিটন – ০১৯১৭৮৯৯৬১৬ – কোনো যানবাহন সংযুক্ত নেই
●    মোঃ কাউসার মুসল্লী – ০১৯১৪৫৬৯৫৪৭ – ঢাকা মেট্রো CHA ১১-৭৬২৬
তারা বিভিন্ন অফিসে উপস্থিত হয়ে একতরফা দাবি দিচ্ছে এবং নিজেদের স্বার্থ চাপিয়ে দিতে চাইছে।
কোনো আনুষ্ঠানিক সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের বৈধতা নেই।

ডিলিস্টেড চালকদের বড় অংশই এই গ্রুপে সক্রিয়
অ্যাপ কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে—এই গ্রুপের বড় অংশই সেই চালক যারা-
●    যাত্রীদের অভিযোগ
●    নিরাপত্তা লঙ্ঘন
●    ভাড়া প্রতারণা 
●    কোয়েস্ট-প্রতারণা ও
●    অ্যাপের শর্ত ভঙ্গ
এসব কারণে বিভিন্ন সময়ে ডিলিস্টেড হয়েছেন। ডিলিস্টেড হওয়ার পর তারা সংগঠিত হয়ে এখন পাঠাও ও উবারের অফিসে গিয়ে চাপ সৃষ্টি এবং অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ।
অফিসে ঢুকে হুমকি–ধমকি ও তালা লাগানোর চেষ্টা
গত দুই দিনে ঢাকার দুইটি বড় রাইডশেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের অফিসে গিয়ে এই গোষ্ঠী সদস্যরা- 
●    হুমকি দিয়েছেন
●    সাধারণ রাইডারদের উত্তেজিত করেছেন
●    এবং কয়েকটি অফিসে তালা লাগানোর চেষ্টা করেছেন

এতে কর্মীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় এবং কয়েকটি অফিসে অস্থায়ীভাবে কাজ বন্ধ রাখতে হয়।
বিআরটিএ’র নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে 
রাইডশেয়ারিং কমিউনিটি ও যাত্রী অধিকার কর্মীদের প্রশ্ন- 
●    আইনি ভিত্তিহীন গ্রুপগুলো কিভাবে বিআরটিএর নাম ব্যবহার করছে?
●    এই ধরনের হামলার পরও কেন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
●    যাত্রী নিরাপত্তা ও সেক্টরের স্থিতিশীলতা কোথায় দাঁড়াবে?

সংশ্লিষ্টদের দাবি—"এটি সেক্টরে বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পিত প্রচেষ্টা"
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরণের হামলা ও অস্থিরতা রাইডশেয়ারিং সেক্টরকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে চালানো হচ্ছে।
ফেইসবুক লিঙ্কঃ

https://www.facebook.com/watch/live/?ref=watch_permalink&v=3004057403120032

https://www.facebook.com/reel/1302702944945002

https://www.facebook.com/reel/696379209934731

https://www.facebook.com/watch/live/?ref=watch_permalink&v=2084356019000918

দেশের হাজারো রাইডারের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে—
আমাদের সবার দায়িত্ব বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং যথাযথ তদন্ত দাবি করা।

উল্লেখ্য, এই সহিংসতা ও অফিসে তালা লাগানোর চেষ্টার ঘটনায় গত ৭ ডিসেম্বর পল্লবী থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।


 

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement