দুবাইয়ের মরুভূমির আকাশ আজ অন্য রকম উত্তেজনায় কাঁপছে। মরুর বুকে আলোকোজ্জ্বল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম যেন প্রস্তুত হয়েছে এক মহারণের মঞ্চ হিসেবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আনুষ্ঠানিকভাবে নাম দেওয়া না হলেও এটি মূলত এক অলিখিত সেমিফাইনাল—কারণ জিতলেই ফাইনাল, হারলেই বিদায়।
ভারত ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে ফাইনালের টিকিট। তাই আজকের ম্যাচের বিজয়ী দল সরাসরি ভারতের সঙ্গে শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
সংখ্যার হিসাব-নিকাশ করলে পাকিস্তান এগিয়ে আছে। দুই দলের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ২৫ ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছে ২০টি, বাংলাদেশের সাফল্য মাত্র ৫টি। নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও পাকিস্তানের দাপট চোখে পড়ার মতো—৮ জয় বনাম বাংলাদেশের মাত্র এক জয়। তবে সাম্প্রতিক পাঁচ লড়াইয়ে ব্যবধান কিছুটা কমেছে; পাকিস্তান জিতেছে ৩টি ম্যাচে, বাংলাদেশ ২টি।
সবশেষ লড়াইটি কিন্তু বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয়। গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ৭৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল।
ভারতের বিপক্ষে ব্যর্থতার পর এই ম্যাচে টাইগার একাদশে হতে পারে একাধিক পরিবর্তন। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরতে পারেন নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস। পাশাপাশি সুযোগ পেতে পারেন পেসার তাসকিন আহমেদ এবং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুরুটা দারুণ হলেও ভারতের কাছে হারের পর আজকের লড়াই বাঁচা-মরার খেলায় পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানও এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এসেছে। ভারতের কাছে হারের পর তারা সুপার ফোরে ফিরলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ে ফিরে এসেছে আত্মবিশ্বাসের ছন্দে।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে শাহিন শাহ আফ্রিদি বলেছেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে ভালো খেলছে। ওদের হারাতে হলে আমাদের প্রতিটি বিভাগেই সেরাটা খেলতে হবে।”
আজকের লড়াই কেবল একটি ম্যাচ নয়—এ যেন স্বপ্ন, আবেগ ও অদম্য লড়াইয়ের প্রতীক। মরুর বুকে ঝলমলে আলোর নিচে গর্জে উঠবে দুই দলের সাহসিকতা। এক পাশে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা, অন্য পাশে বাংলাদেশের তরুণ তেজ ও নতুন ইতিহাস লেখা করার আকাঙ্ক্ষা।
রাতের আকাশে যখন সাদা বল উড়বে, প্রতিটি শট, প্রতিটি ডেলিভারি হয়ে উঠবে এক কবিতার পংক্তি। জয় কেবল পরিসংখ্যানের মুকুট নয়—জয় মানে এক জাতির উল্লাস, আরেক জাতির ব্যথা। আজ এই কবিতার শেষ পংক্তি কে লিখবে—বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান? উত্তর মিলবে আজ রাতেই, দুবাইয়ের মরুভূমিতে ঝলমলে স্টেডিয়ামে।
