ডাকসু ভোটে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলল ছাত্রদল, চায় স্পষ্ট জবাব

ডাকসু ভোটে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলল ছাত্রদল, চায় স্পষ্ট জবাব ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৩:৩৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। তাদের দাবি, এসব অভিযোগের সঠিক জবাবদিহি নিশ্চিত না করা হলে নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। প্রয়োজনে তারা নির্বাচন পুনর্বিবেচনা এবং এমনকি পুনর্নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

আবিদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, তার বিচার চাই। প্রয়োজনে আমরা ডাকসু নির্বাচন পুনর্বিবেচনার সুযোগ আদায় করব।”

তিনি অভিযোগ করেন, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পদ্ধতিগত নানা গাফিলতি ও অসঙ্গতির কারণে শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।

ছাত্রদলের প্রধান অভিযোগগুলো

১. ভোটার তালিকা ও ব্যালট কারচুপি – অনেক ভোটারের নামে আগেই স্বাক্ষর দেওয়া ছিল, এমনকি নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে চিহ্নিত ব্যালট সরবরাহ করা হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি ও ভোট প্রদানে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

২. ক্রমিক নম্বরবিহীন ব্যালট – ২০১৯ সালের মতো এবারও ব্যালটে ক্রমিক নম্বর ছিল না। কত ব্যালট ছাপানো বা বাতিল হয়েছে সে তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।

৩. নকল ব্যালটের অভিযোগ – নির্বাচনের আগের দিন নীলক্ষেতের এক ছাপাখানায় বিপুল ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়।

৪. ভোট গণনা সফটওয়্যার – নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা হলেও প্রার্থী ও ভোটারদের অবহিত করা হয়নি। গণনাপ্রক্রিয়ায় এজেন্টদের কোনো ভূমিকা ছিল না।

৫. পোলিং এজেন্টে জটিলতা – দেরিতে আইডি কার্ড প্রদান, তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং কেন্দ্র প্রবেশে বাধা দেওয়া।

৬. কেন্দ্রসংখ্যা বিভ্রান্তি – প্রার্থীদের বলা হয়েছিল ৮টি কেন্দ্রে ভোট হবে, অথচ ভোটের দিন তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮টি।

৭. প্রশাসনের পোলিং অফিসার নিয়োগ – নির্বাচন কমিশনের বদলে প্রশাসনের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেছেন, যারা আচরণবিধি মানেননি।

৮. বহিরাগত প্রবেশ – বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইডের সহায়তায় বহিরাগতদের প্রবেশ করানো হয়েছে।

৯. স্বচ্ছ বাক্স ব্যবহার হয়নি – অনেক কেন্দ্রে সকালে মার্কার না থাকায় ভোটারদের বলপেন ব্যবহার করতে হয়েছে, ফলে অনেক ভোট গণনায় সমস্যায় পড়ে।

১০. অস্থায়ী কালি – স্থায়ী না হওয়ায় একজন ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

আবিদুল আরও বলেন, “আমাদের প্রার্থীদের ভোটকেন্দ্রে ব্যালট নেওয়ার সময়ও হয়রানি করা হয়েছে। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন যদি এসব অনিয়মের ব্যাখ্যা না দেয়, তবে এই নির্বাচন পুনর্বিবেচনার সুযোগ অবশ্যই তৈরি হবে।”

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল দাবি করে, বারবার অভিযোগ জানানোর পরও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাদের মতে, এভাবে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচন ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের তালিকায় যুক্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছাত্রদল নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেবেন।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement