মাদক বিক্রি ঠেকাতে গিয়ে প্রাণ গেল ছাত্রদল নেতা সাম্যের

মাদক বিক্রি ঠেকাতে গিয়ে প্রাণ গেল ছাত্রদল নেতা সাম্যের ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৪:১৭, ৮ নভেম্বর ২০২৫

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে সাতজন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, উদ্যানে গাঁজা বিক্রি বন্ধ করতে বলার কারণেই সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়।

ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আখতার মোর্শেদ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই চার্জশিট জমা দেন।

তিনি জানান, নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। মামলায় সাতজনকে অভিযুক্ত করা হলেও চারজনের বিরুদ্ধে প্রমাণ না থাকায় তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন মেহেদী। তিনি নিয়মিত গাঁজা সরবরাহ করতেন এবং তার সহযোগীরা— কবুতর রাব্বি, রিপন, নাহিদ পাপেল, হৃদয়, লম্বু সোহাগ ও রবিন— উদ্যানের মন্দির গেটের আশপাশে খুচরা বিক্রি করতেন।

ঘটনার আগে রিপন ও কবুতর রাব্বি অভিযোগ করেন যে স্থানীয় মাস্তানরা তাদের কাছ থেকে জোর করে গাঁজার টাকা নিয়ে গেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেহেদী তাদের প্রতিরোধের নির্দেশ দেন এবং কয়েকজনকে সুইচ গিয়ার চাকু ও ইলেকট্রিক ট্রেজারগান সরবরাহ করেন।

ঘটনার রাতে সাম্য তার দুই বন্ধুসহ মোটরসাইকেলে মুক্তমঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন। সে সময় কবুতর রাব্বিকে অস্ত্র হাতে দেখে থামতে বলেন তিনি। রাব্বি পালানোর চেষ্টা করলে সাম্য ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলেন এবং অস্ত্রটি কেড়ে নিতে চান। তখন উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে মেহেদী এগিয়ে এসে সাম্যকে ঘুষি মারেন এবং রাব্বি হাতে থাকা চাকু দিয়ে সাম্যের উরুতে আঘাত করেন।

রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্য মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে— মেহেদী হাসান, মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বি, মো. রিপন ওরফে আকাশ, নাহিদ হাসান পাপেল, মো. হৃদয় ইসলাম, মো. হারুন অর রশিদ সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ এবং মো. রবিনকে। তদন্ত কর্মকর্তা তাদের সবাইকে চিহ্নিত মাদক কারবারি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে, চারজন— তামিম হাওলাদার, সম্রাট মল্লিক, পলাশ সরদার ও সুজন সরকার— প্রমাণের অভাবে অব্যাহতি পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, নিহত সাম্যর বড় ভাই শরীফুল ইসলাম গত ১৪ মে শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement