পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও: সাংবাদিক বাদলকে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতারের দাবিতে কর্মসূচি

Published : ০০:০৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রকাশের জেরে রংপুরে সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের দাবিতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন সাংবাদিকেরা।
একই সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে যাওয়া গণমাধ্যমকর্মীদের হেনস্তা করার জন্য রংপুর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এসময় সাংবাদিক নেতারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেন। ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় ঘেরাও করে এই আলটিমেটাম দেন সাংবাদিকগণ।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে বিক্ষোভ শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতারা অভিযোগ করেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের অটোরিকশা লাইসেন্স-বাণিজ্যে পাঁচ কোটি টাকার দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক বাদল হামলার শিকার হয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর লাইসেন্স বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একটি চক্র গত ২১ সেপ্টেম্বর রবিবার নগরীর কাচারি কোর্ট মসজিদের সামনে থেকে বাদলকে তুলে নিয়ে যায় ও মারধর করে। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীর কক্ষে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ দেয়। এ হামলায় ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে রকি নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অংশ নেয়। এ ঘটনায় রবিবার রাতে সাংবাদিক বাদল বাদী হয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২০-২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি রতন মিয়াকে গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শাপলা চত্ত্বর থেকে গ্রেফতার করে। এরপর গত মঙ্গলবার ছয় নম্বর আসামি রকিবুল হাসান সাগরকে গ্রেফতার করা হয়। রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরপিইউজে) সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, শান্তিপূর্ণ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
যদি মূল আসামিদের গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করব। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, লিয়াকত আলী বাদল উত্তরবঙ্গের নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিক। ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি একটি রিপোর্ট করেছিলেন। তাঁকে সন্ত্রাসী কায়দায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা হয়েছে, সেই অফিসের কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল তাঁকে জিজ্ঞাসা করা। কিন্তু যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, সাংবাদিক যদি সংবাদ পরিবেশনের কারণে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের শিকার হন, তা হলে জনগণ কীভাবে খবর পাবে? এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারাই জড়িত থাকুক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অল্প সময়ের মধ্যে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।