ভিডিওতে ধরা পড়ল সশস্ত্র পাহাড়ি গোষ্ঠীর হামলার দৃশ্য

ভিডিওতে ধরা পড়ল সশস্ত্র পাহাড়ি গোষ্ঠীর হামলার দৃশ্য ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১১:২৪, ২ অক্টোবর ২০২৫

খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে আন্দোলনের সুযোগে সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ ও জেএসএস।

অন্তত পাঁচজনের একটি দলকে হাতে অস্ত্র নিয়ে দেখা গেছে, যাদের সরাসরি সেনা ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে টার্গেট করতে দেখা যায়।

ঘটনার সময়কার মোবাইল ভিডিওচিত্রে এসব প্রমাণ ধরা পড়ে, যা আমার দেশ-এর হাতে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে সেনাদের দিকে হামলা চালায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, সংঘর্ষ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। রামসুবাজার এলাকায় পেট্রল ঢেলে সিএনজি অটোরিকশায় আগুন দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে না থাকলে ধ্বংসযজ্ঞ আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারত।

আমার দেশ-এর হাতে আসা শনিবারের ১০টি ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ির চেঙ্গী স্কয়ারে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচজন সশস্ত্র ব্যক্তি প্রায় ৪০০ মিটার দূরে মোতায়েন সেনাদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় সেনারা বাঙালি ও পাহাড়িদের সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করছিলেন।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ভারী অস্ত্র হাতে গুলি ছুড়ছিলেন জেএসএসের সামরিক শাখার সদস্য শান্তি প্রিয় চাকমা ওরফে কামিয়াধন চাকমা। তার বাড়ি খাগড়াছড়ির ছোট পানছড়ির ঝাউপাড়ায়।

এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের অস্ত্র হাতে চারতলা ভবনের ছাদে অবস্থান করতে দেখা যায়। একজন পাহাড়িকে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, সেনারা ওপরের দিকে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে, কিন্তু ইউপিডিএফের সন্ত্রাসীরা সরাসরি সাধারণ পাহাড়িদের দিকে গুলি চালিয়েছে।

ওইদিন গুলিতে তিনজন পাহাড়ি নিহত হন— আথুই মারমা (২১), আথ্রাউ মারমা (২২) ও তৈইচিং মারমা (২০)। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ ১৬ সেনা সদস্য এবং গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন আহত হন।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, যাদের অস্ত্র হাতে দেখা গেছে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। সন্ত্রাসী ও অরাজকতাকারীদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে সন্ত্রাস চালাচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ঘটনা প্রমাণ করেছে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠনগুলো শান্তিচুক্তির সুযোগ নিয়ে আবারও শক্তি সঞ্চয় করেছে। সীমান্ত এলাকায় নতুন সেনাক্যাম্প স্থাপন ও সেনা-পুলিশের সমন্বিত অভিযান ছাড়া এসব তৎপরতা রোধ সম্ভব নয়। না হলে ভবিষ্যতে বড় রক্তপাতের ঝুঁকি থেকেই যাবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement