জুমার দিন ইসলামে এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ দিনটিকে ‘সাপ্তাহিক ঈদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সৃষ্টির শুরু থেকেই এই দিনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
ইসলামী দৃষ্টিতে জুমার দিনে এমন কিছু আমল রয়েছে, যা পালনের মাধ্যমে একজন মুসলমান বিপুল সওয়াব ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন। নিচে হাদিস অনুযায়ী জুমার দিনে পালনযোগ্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো।
১. বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
জুমার দিনে নবী করিম (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। রাসুল (সা.) বলেছেন,
“তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর প্রচুর দরুদ পাঠ করো, কারণ তোমাদের দরুদ সরাসরি আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।” (আবু দাউদ: ১০৪৭)
আরেকটি হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে আমার ওপর ১০০ বার দরুদ পাঠ করে, কেয়ামতের দিন তার মুখ এত উজ্জ্বল হবে যে মানুষ তা দেখে বিস্মিত হবে।” (কানজুল উম্মাল: ১৭৪)
২. দোয়া কবুলের বিশেষ সময়ে দোয়া করা
জুমার দিনে এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যখন কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে যা চায়, তা কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন,
“জুমার দিনে একটি মুহূর্ত আছে, যখন কোনো বান্দা আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন।” (বুখারি: ৬৪০০)
বেশিরভাগ আলেমদের মতে, এই বিশেষ মুহূর্তটি আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত থাকে। তাই এই সময়ে বেশি করে দোয়া, জিকির ও ইস্তেগফার করা অত্যন্ত উত্তম।
৩. সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করা
জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করলে তা পরবর্তী জুমা পর্যন্ত আলো ও বরকতের উৎস হয়ে থাকে। নবীজি (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত নুরের আলো বিকশিত থাকবে।” (মেশকাত: ২১৭৫)
এছাড়া এই সুরার প্রথম ১০ আয়াত বা শেষ ১০ আয়াত মুখস্থ রাখলে দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলে হাদিসে উল্লেখ আছে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আমল
জুমার দিন গোসল করা, মিসওয়াক করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, পরিষ্কার ও সুন্দর পোশাক পরা, আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া এবং খুতবার সময় মনোযোগ দিয়ে শোনা — এসব কাজও অত্যন্ত সওয়াবের।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিনের এসব আমল আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 
				 
						
 
											 
											 
											 
											





























