ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক জটিল পারিবারিক টানাপোড়েনের ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন রুমা আক্তার (৩৬) নামের এক নারী।
দুই সন্তানের মা রুমা প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রবাসে পরিচিত এক স্বদেশী যুবককে বিয়ে করলেও, এখন সেই দ্বিতীয় বিয়েটিই বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বামীর পরিবারের স্বীকৃতি না পেয়ে তিনি পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ঘটনা শুরু হয় প্রায় দুই বছর আগে। নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিসপুর ইউনিয়নের দাসপাড়া ঘোড়াদিয়া গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে রুমা আক্তার পরিবারের জন্য ভালো জীবন গড়তে কুয়েত যান। সেখানে একটি হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি।
এ সময় পরিচয় হয় নান্দাইলের রাজগাতি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমানের ছেলে নুর নবীর (৩০) সঙ্গে। প্রবাসেই দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই রুমা দেশে থাকা স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রায় এক বছর আগে নুর নবীকে বিয়ে করেন।
শুরুর দিকে তাদের দাম্পত্য জীবন ঠিকঠাক চললেও পরে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বিয়ের খবর নুর নবীর পরিবারের কাছে পৌঁছানো মাত্রই তারা বিষয়টি মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও দূরত্ব তৈরি হয় এবং তারা আলাদা জায়গায় বসবাস শুরু করেন। এর মধ্যেই রুমা ২২ নভেম্বর দেশে ফেরেন এবং ২৭ নভেম্বর মাকে সঙ্গে নিয়ে নান্দাইলের দক্ষিণ খয়রাটি গ্রামে স্বামীর বাড়ির খোঁজে যান। স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে প্রথমে কিছুটা আশ্বাস পেলেও পরে স্বামীর পরিবার তাদের কঠোরভাবে তাড়িয়ে দেয়।
তবুও হাল ছাড়েননি রুমা। স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে তিনি আবারও শনিবার স্বামীর বাড়ির সামনে এসে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এলাকার মানুষও বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য প্রকাশ করে।
ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, রুমা আক্তার বিয়ের কাগজপত্র দেখানোর পর তিনি তাকে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু স্থানীয়ভাবে ভয়ভীতির সৃষ্টি করে তাকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়।
অপরদিকে সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান, যিনি রুমার দাবি করা শ্বশুর, জানিয়েছেন— ছেলে যদি বিয়ে করে থাকে, সেটি তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। ছেলে এখন বাড়িতে নেই এবং তার নিজের আলাদা কোনও ঘরবাড়িও নেই, তাই পরিবারের পক্ষ থেকে রুমাকে গ্রহণ করার কোনো কারণ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
ঘটনা সম্পর্কে নান্দাইল থানার সহকারী উপপরিদর্শক ঝুটন চন্দ্র সরকার জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য ওই নারীকে পরিবারসহ থানায় আসতে বলা হয়েছে। তারা এলেই আইনগত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
































