বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর টয়লেটের রোমাঞ্চ

বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর টয়লেটের রোমাঞ্চ ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৭:১২, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

রাশিয়ার সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত ও বরফে আচ্ছাদিত পাহাড়ি অঞ্চলে রয়েছে এমন একটি টয়লেট, যেটিকে বহু মানুষ পৃথিবীর অন্যতম ভয়াবহ ও ঝুঁকিপূর্ণ টয়লেট বলে মনে করেন।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৬০০ মিটার (৮,৫০০ ফুট) উঁচুতে, বরফে ঢাকা এক পাহাড়ের ধার ঘেঁষে ঝুলে থাকা এই টয়লেটের নিচেই রয়েছে কয়েক হাজার ফুট গভীর খাদ। চারদিকে বরফ, তীব্র ঠান্ডা হাওয়া আর নীরব মৃত্যুঝুঁকি—সব মিলিয়ে এটি এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার নাম।

সাইবেরিয়ার দুর্গম কৃষ্ণয়া কামেনা এলাকায় অবস্থিত এই টয়লেট মূলত সেখানকার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের জন্য তৈরি। কয়েকজন বিজ্ঞানী ও কর্মী দীর্ঘ সময় ধরে এই এলাকা থেকেই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের কাজ করেন।

তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর জন্যই কাঠের তৈরি ছোট এই টয়লেটঘরটি স্থাপন করা হয় পাহাড়ের একদম প্রান্তে, যেন জায়গার অভাবে এটিকে ঝুলিয়েই রাখা হয়েছে।

এই টয়লেট ব্যবহার করাও যেন এক রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা। প্রবল হাওয়া, বরফ আর পিচ্ছিল পথ পেরিয়ে দড়ি ধরে পৌঁছাতে হয় সেখানে। সামান্য পা হড়কালেই নিচে অপেক্ষা করছে ভয়ংকর খাদ।

বিশেষ করে শীতকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে—তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, চারদিকে অন্ধকার আর তুষারঝড়ের গর্জন। কখনো এতটাই বরফ জমে যায় যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পর্যন্ত হেলিকপ্টারে পৌঁছে দিতে হয়।

একজন ভ্রমণকারী যখন ইনস্টাগ্রামে এই টয়লেটের ছবি শেয়ার করেন, মুহূর্তেই তা নজর কাড়ে লাখো মানুষের। সবাই অবাক হয়ে জানতে চান, এমন পরিবেশে আদৌ কীভাবে কেউ টয়লেট ব্যবহার করে!

তবে এই টয়লেট শুধু অদ্ভুত স্থাপনা নয়; এটি মানুষের অবিশ্বাস্য সহনশীলতা, অভিযোজনক্ষমতা আর প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্যের প্রতীক। সাইবেরিয়ার কঠোর প্রকৃতি, তুষারঝড় আর তীব্র ঠান্ডাকে মোকাবিলা করেও বিজ্ঞানীদের কাজ চালিয়ে যেতে হয়, আর সেই বাস্তবতারই নীরব সাক্ষ্য এই ঝুলন্ত টয়লেট।

প্রকৃতির সীমাহীন কঠিনতার মাঝেও মানুষ যে নিজের প্রয়োজনে টিকে থাকতে পারে, সেই অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই ভয়ংকর টয়লেটটি।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement