আবু সাঈদ হত্যা: ২৪ আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

Published : ১৫:৪১, ১৩ জুলাই ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৪ আসামির বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা এবং আগামী ২২ জুলাই তাদের হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকা আসামি রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ আপিলকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
রোববার (১৩ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার ও আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ।
এর আগে ট্রাইব্যুনালে আবু সাঈদ হত্যা মামলার ৪ আসামিকে হাজির করা হয়।
৪ আসামি হলেন- পুলিশের সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশ।
গত ৩০ জুন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদ হত্যা মামলায় অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এই মামলায় পলাতক থাকা ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ দেন।
গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদ হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদনে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার বিষয় উঠে এসেছে।
গত ১৫ জুন আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আগামী ১৪ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ মামলার শুনানির জন্য ২৬ জুন দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ বিচারকের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ ও এস এম মঈনুল করিম। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।
গত ৯ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল এ ৪ জনকে হাজির করার নির্দেশ দেয় এবং ১৫ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে সহায়তা ও উসকানি দিয়েছেন। ওই ৪ আসামি অন্য মামলায় আগে থেকেই গ্রেপ্তার ছিলেন।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন।
সেদিন সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করার মধ্যে তাকে গুলি করার ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে ছাত্র-জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সেদিন থেকেই সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
পরদিন থেকে সারাদেশে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর একের পর এক মৃত্যু, সরকারি সম্পত্তিতে হামলা, আগুনের মধ্যে ১৯ জুলাই কারফিউ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি শেখ হাসিনা সরকার।
তুমুল গণ-আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট পতন হয় টানা সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসন, শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে পাড়ি জমান।
বিডি/ও