“জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: প্রতিশ্রুতি এবং অগ্রাধিকার” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

“জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬: প্রতিশ্রুতি এবং অগ্রাধিকার” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

অর্থনীতি ডেস্ক:

Published : ১৬:৪৪, ২২ জুন ২০২৫

ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এর উদ্যোগে “জাতীয় বাজেট ২০২৫–২৬: প্রতিশ্রুতি এবং অগ্রাধিকার” শীর্ষক একটি সেমিনার করা হয়েছে। 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান ও মানারাত ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব এবং সঞ্চালনা করেন ড. মুহাঃ রফিকুল ইসলাম।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ান ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টের ডিস্টিংগুইস ফেলো এবং সিটি ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় ও অর্থনীতি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. জুলফিকার হাসান। 

তিনি বলেন, ‘বাজেটটি একটি রক্ষণশীল ও সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে প্রণীত হলেও এতে কাঙ্ক্ষিত কাঠামোগত সংস্কারের অভাব রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, যুব উন্নয়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কিছু প্রতিশ্রুতি বাজেটে প্রতিফলিত হলেও সামাজিক খাতে বরাদ্দ হ্রাস ও কর কাঠামোর বৈষম্য প্রশ্ন তুলছে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে।’

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ। 

বাজেট আলোচনায় তিনি বলেন, ‘ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এইবছর বাজেট ঘাটতি কমানোর জন্য পরোক্ষ কর বৃদ্ধি করেছেন এটা আরো সতর্কতার সাথে এসেসমেন্ট করা দরকার। জুলাই বিপ্লবের পরে নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশে কালো টাকা সাদা করার কোন সুযোগ রাখা উচিত নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে যে বাজেট বাস্তবায়ন শেষ হলো তার সফলতা ও ব্যর্থতা আছে তবে আগামী অর্থবছরের বাজেট বেশ সতর্কতার সাথে গ্রহণ করতে হবে। 

ইরান-ইসরায়েলসহ বিভিন্ন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে প্রত্যেক দেশের উচিত তার নিজের মত করে বাজেট প্রণয়ন করা। এই বাজেট পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত যেসব পরামর্শগুলো আসছে সেগুলো দেখা উচিত তাহলে এটা একটি সার্বজনীন প্রতিনিধিত্বমূলক ভালো বাজেট হবে।’

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল। 

তিনি বলেন, ‘এই বছর বাজেট প্রণয়নে দেশের গুরুত্বপূ্র্ণ স্টেকহোল্ডার জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করা উচিত ছিল কিন্তু তা করা হয়নি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিকে এগিয়ে নেওয়া ও শিক্ষা খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। পাশাপাশি তরুণ ও যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য যে বাজেট দেওয়া হয়েছে তা অনেক কম। থ্রি জিরো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যে বাজেট পেশ করা হয়েছে সে বিষয়ে আরেকটি জিরো "করাপশন জিরো"  নিশ্চিত হওয়া জরুরী। অর্থাৎ এই ফোর জিরো নিশ্চিত করা না গেলে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী বিভিন্ন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলো থেকে যে সমালোচনা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সেগুলোকে আমলে নেওয়ার আহ্বান জানান।’

বাজেট আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এইচ এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে বৈষম্য দূরীকরণে ভ্যাট কমিয়ে ইনকাম ও করপোরেট ট্যাক্স বৃদ্দি করা দরকার। তাছাড়া এই বাজেটে  সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে যে বরাদ্দ করেছেন তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’ 

আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (বিআইজিএম) সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমেদ যোবায়ের, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক।

তারা প্রত্যেকে বাজেটের সীমাবদ্ধতা, কর্মসংস্থান সংকট, তরুণদের জন্য যথাযথ কৌশলগত পরিকল্পনার অভাব, এবং গ্রীন অর্থনীতির বাস্তবায়নে দুর্বলতার দিকগুলো তুলে ধরেন।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement