সামিট কমিউনিকেশনসের শেয়ার ইস্যুতে সরকারি রাজস্ব লোপ: ৭ জন অভিযুক্ত

সামিট কমিউনিকেশনসের শেয়ার ইস্যুতে সরকারি রাজস্ব লোপ: ৭ জন অভিযুক্ত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:৪৭, ২৬ আগস্ট ২০২৫

সরকারের ১০ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার ৬৫২ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন বাদী হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

মামলার আসামিরা হলেন— সামিট কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খান, বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব, বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক কমিশনার (আইন) মো. আমিনুল হক বাবু, সাবেক কমিশনার (স্পেকট্রাম) শেখ রিয়াজ আহমেদ, সাবেক কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব) ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী এবং সাবেক কমিশনার (সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস) মো. দেলোয়ার হোসাইন।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, সামিট কমিউনিকেশনস বেআইনিভাবে ১৪ কোটি ২০ লাখ ৮৮ হাজার ১৩৬টি নতুন অর্ডিনারি শেয়ার ইস্যু করে। এর মধ্যে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৯১১টি শেয়ার সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক গ্লোবাল এনারিং-এ দেওয়া হয়, যা মুহাম্মদ আজিজ খান ও তার পরিবারের মালিকানাধীন। ৪ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১১৯টি শেয়ার মরিশাসভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেকুওয়া ইনফ্রা টেক লিমিটেডকে দেওয়া হয়। বাকি ৭১ লাখ ৪ হাজার ৪০৬টি শেয়ার পূর্বের শেয়ারহোল্ডার মো. আরিফ আল ইসলামের অনুকূলে দেওয়া হয়।

এই শেয়ার ইস্যুর ফলে কোম্পানির মূলধন প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে মোট শেয়ার সংখ্যা ৫.০৭ কোটি থেকে বেড়ে ১৯.২৮ কোটিতে পৌঁছে। এর প্রভাব হিসেবে মোহাম্মদ ফরিদ খানের মালিকানা ৯৫ শতাংশ থেকে নেমে ২৫ শতাংশে আসে। অন্যদিকে দুই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের যৌথ মালিকানা দাঁড়ায় ৭০%-এ।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১-এর ধারা ২৪ অনুযায়ী, শেয়ার হস্তান্তর বা মালিকানা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিক্রিত শেয়ারের মূল্যের ৫.৫% রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। ২০২২ সালে একই কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারি রাজস্ব আদায়ে এই আইন প্রয়োগ থাকলেও, এবারে বিটিআরসির প্যানেল আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সামিট কমিউনিকেশনসের জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত ৫.৫% প্রযোজ্য নয় বলে মতামত দেন।

মতামতের ভিত্তিতে বিটিআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কমিশনাররা শেয়ারের অনুমোদন দেন, ফলে সরকার প্রায় ১০ কোটি ২৪ লাখ টাকার রাজস্ব হারায়।

দুদক উপপরিচালক মো. আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম সামিট গ্রুপের দুর্নীতি ও অনিয়ম অনুসন্ধান করছে।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement