ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক ভাই হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন জনাত

Published : ১৮:৪৫, ১৯ আগস্ট ২০২৫
ইসরায়েলি হামলায় নিহত আল-জাজিরার সাংবাদিক মোহাম্মদ নুফালের বোন জনাত বর্তমানে গভীর শোকের মধ্যে আছেন। ফিলিস্তিনের গাজার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে তিনি ডিজিটাল মিডিয়ায় পড়াশোনা করছেন।
জনাতের পরিবার গত দুই বছরে একের পর এক সদস্য হারিয়েছে। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর, যুদ্ধ শুরুর মাত্র তিন সপ্তাহ পর জাবালিয়ায় তাদের বাড়িতে রকেট হামলায় চাচা ও চাচি নিহত হন। ওই ঘটনায় ভাই মোহাম্মদ গুরুতর আহত হলেও জনাত ও অন্য ভাইবোনেরা প্রাণে বেঁচে যান।
পরবর্তী সময়ে, ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে বোমা হামলায় বড় ভাই ওমার নিহত হন। এরপর ২০২৫ সালের ২২ জুন আত্মীয়দের সঙ্গে ইসরায়েলি বোমায় প্রাণ হারান মা মুনীরা।
সবশেষে, চলতি বছরের ১০ আগস্ট গাজার আল-শিফা হাসপাতালে একটি মিডিয়া টেন্টে ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিক মোহাম্মদসহ আরও ছয়জন নিহত হন। বর্তমানে জনাতের জীবিত পরিবারে আছেন বাবা রিয়াদ, ভাই ইব্রাহিম এবং তিন বোন—ওলা, হাদীল ও হানান।
জনাত জানান, বড় ভাই ওমার মারা গেলে তাদের বাবা অসহায় কণ্ঠে বলেছিলেন, “হে আল্লাহ, তুমি আমার পিঠ ভেঙে দিয়েছো।” মা মুনীরার মৃত্যুতে তাঁর কণ্ঠ কেঁপে ওঠে, বলেছিলেন “আমরা বিধ্বস্ত।” কিন্তু সাংবাদিক পুত্র মোহাম্মদের মৃত্যুর পর তিনি নিস্তব্ধ হয়ে যান। সেই নীরবতা জনাতকে আরও আতঙ্কিত করে তোলে।
মোহাম্মদের মৃত্যুর পর ছোট ভাই ইব্রাহিমকে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন জনাত। তবে ইব্রাহিম জানান, পারিবারিক দায়িত্ব ও নিহত ভাইয়ের পথ অনুসরণ করাই তার সংকল্প।
“আমাদের জীবনে ভয় এখন স্থায়ী হয়ে গেছে,” বলেন জনাত। “শোক আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ঢুকে পড়েছে। আমরা আর এমন মৃত্যু সহ্য করতে চাই না।”
সরকারি তথ্যে জানা যায়, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ২ হাজার ২০০ পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আরও ৫ হাজার ১২০ পরিবারের কেবল একজন সদস্য বেঁচে আছেন। একের পর এক হামলায় হাজারো পরিবার টিকে থাকার লড়াই চালাচ্ছে।
বর্তমানে গাজার উত্তরাঞ্চলে নতুন করে ইসরায়েলি আক্রমণ শুরু হয়েছে। জাবালিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে থেকে যাওয়া জনাত ও তার পরিবার এবার নিরাপত্তার কারণে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
BD/AN