গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনে সহায়তা যাত্রার প্রতি সংহতি জানিয়ে ইতালিতে বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নিয়েছে।
ইতালিয়ান জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার (সিজিআইএল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, ফ্লোটিলার প্রতিরক্ষা এবং গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। শুক্রবার এই ধর্মঘটের আড়ালে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অংশ নেন।
বিক্ষোভের কারণে ইতালির বিভিন্ন সেবা খাত প্রভাবিত হয়েছে, দেশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। দৈনিক লা স্টামপার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্দোনের অংশ হিসেবে রেল, আকাশ, মেট্রো ও বাসসহ গণপরিবহন বন্ধ ছিল। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি খাতের সেবা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমেও বিঘ্ন ঘটেছে। আন্দোলনকারীরা পিসা, পেসকারা, বলংগা ও মিলানের নিকটবর্তী হাইওয়েস ও লিভোর্নো বন্দরে প্রবেশও বন্ধ করে দিয়েছে।
পুলিশ সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, মিলানের রাস্তায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ সমবেত হয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা “ফিলিস্তিন মুক্ত করো”, “স্টপ দ্য ওয়ার মেশিন” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সিজিআইএলের নেতা মাওরিজিও লানদিনি বলেন, এই সমাবেশ কোনো ধর্মঘট নয়; বরং এটি ভ্রাতৃত্ব ও মানবতা ফিরিয়ে আনা এবং গণহত্যা বন্ধের প্রতি ঐক্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব রোমের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বিশ্বরাজনীতির সহকারী অধ্যাপক আন্দ্রে দেসি মন্তব্য করেন, এই আন্দোলনের কারণে ইতালি সরকার প্রচণ্ড চাপে পড়েছে এবং এই চাপ ভবিষ্যতেও বাড়তে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলানি ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির শর্তে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তবে আন্দোলনকারীরা মনে করেন, ফিলিস্তিনকে শর্তহীনভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
শুক্রবারের সমাবেশের পরে শনিবারও রোমের পিয়াজ্জা অস্টিনসিস স্কোয়ার থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ফ্লোটিলা ও ফিলিস্তিনের জন্য মানবিক সহায়তা যাত্রার প্রতি সংহতি জানিয়ে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকাতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার বার্সেলোনায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ সমবেত হয়ে “গাজা তুমি একা নও”, “বয়কট ইসরাইল” এবং “ফ্রিডম ফর প্যালেস্টাইন” স্লোগান দেন।
