রোহিঙ্গা সমাধানে ড. ইউনূসের সাত দফা রোডম্যাপ প্রকাশ

রোহিঙ্গা সমাধানে ড. ইউনূসের সাত দফা রোডম্যাপ প্রকাশ

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:১৫, ২৫ আগস্ট ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। সোমবার কক্সবাজারে আয়োজিত রোহিঙ্গা অংশীজন সংলাপে বক্তৃতাকালে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কার্যকর ও জোরালো ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিপীড়ন ও বাস্তুচ্যুতি রোধে এখনই বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন। তিনি দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের রোডম্যাপ প্রণয়ন, আন্তর্জাতিক দাতাদের সহায়তা অব্যাহত রাখা, রোহিঙ্গাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গঠনমূলক সংলাপ এবং আসিয়ানসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি তিনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমির সঙ্গে তাদের নাড়ির সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। এখন আর কেবল বক্তৃতায় সীমাবদ্ধ থাকার সময় নেই, কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

তিনি সতর্ক করে দেন, বিশ্ব সম্প্রদায় কার্যকর না হলে রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমি থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদের ঝুঁকিতে পড়বে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখ জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি কক্সবাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে পরিণত করেছে। প্রতিবছর প্রায় ৩২ হাজার নতুন শিশু শিবিরে জন্ম নিচ্ছে, অথচ মিয়ানমারে রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখেরও কম।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তবে জাতীয় উৎস থেকে আর কোনো সহায়তা জোগাড় সম্ভব নয় বলে তিনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান।

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক অনুপ্রবেশের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, সেই বর্বরোচিত আক্রমণ ও নির্যাতন এখনো চলমান। তাই সমাধানও মিয়ানমার থেকেই আসতে হবে।

রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে আশ্বাস দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সবসময় তাদের পাশে থাকবে এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “চলুন আমরা হাতে হাত রেখে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করি।”

অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস স্মরণ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজু প্রমুখ। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা এ সংলাপে যোগ দেন।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement