রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ১১ দেশের

রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ১১ দেশের

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৬:৪২, ২৫ আগস্ট ২০২৫

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আট বছর পূর্তিতে পশ্চিমা বিশ্বের ১১টি দেশ বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিশ্রুতি জানায়।

আট বছর আগে মিয়ানমারের সেনা অভিযানে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা, যাদের অনেকে এখনো ঢলে ঢলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসছে। এ দীর্ঘ দুঃসহ বাস্তুচ্যুতির মধ্যেও রোহিঙ্গাদের দৃঢ় মনোবলকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনের নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে, যা বাস্তুচ্যুতি সংকটকে আরও জটিল করে তুলছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। কেবল আশ্রয় নয়, বাংলাদেশ নতুন আগতদেরও টিকে থাকার মতো মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পথ খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে পরিস্থিতি এখনো স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী নয়। এ জন্য জরুরি হলো, একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার।

বিবৃতিতে মিয়ানমারের সেনা সরকার ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ ও মানবিক সহায়তার জন্য নিরাপদ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে অন্যায়ভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গা ও সংশ্লিষ্ট মানবিক সংকট সমাধানে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে ১১ দেশ। এর অংশ হিসেবে আগামী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

তারা জোর দিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গাদের আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানো, টেকসই সমাধানের পথ খোঁজা এবং ভবিষ্যতে মিয়ানমারে ফেরার জন্য প্রস্তুত করা জরুরি। একই সঙ্গে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের প্রতিও সহায়তা অব্যাহত থাকবে, যারা মানবিকতা দেখিয়ে দীর্ঘদিন শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের অর্থবহ অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এতে তারা বাংলাদেশে অবস্থানকালে মর্যাদাপূর্ণ, নিরাপদ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। আট বছর পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement