নতুন পে-স্কেলে বাতিল হবে পুরনো আর্থিক সুবিধা

নতুন পে-স্কেলে বাতিল হবে পুরনো আর্থিক সুবিধা ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৪:৪৪, ২০ অক্টোবর ২০২৫

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নতুন জাতীয় বেতন কাঠামো চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই গেজেট আকারে নতুন পে-স্কেল প্রকাশ এবং তা কার্যকর করার লক্ষ্য রয়েছে।

ইতিমধ্যেই জাতীয় পে-কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

নতুন বেতন কাঠামো চালু হলে শুধু বেতনের পরিমাণ বৃদ্ধি হবে না, বরং চিকিৎসা, শিক্ষা, পদোন্নতি ও অন্যান্য ভাতার কাঠামোয়ও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। তবে একাধিক পুরনো আর্থিক সুবিধা বাতিলের প্রস্তাবও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পে-কমিশনের প্রাথমিক খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, বর্তমান বহুবিধ ভাতা ও সুবিধার পরিবর্তে একটি সমন্বিত বেতন কাঠামো চালু করা হবে, যা ‘সাকুল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে কর্মকর্তারা আর আলাদা কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না—সব কিছুই একক কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বিশ্বের অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে ইতিমধ্যেই এই মডেল কার্যকর রয়েছে। এতে বেতনের সঙ্গে সব সুবিধা একত্রিত থাকে, ফলে আলাদা ভাতা ব্যবস্থাপনা এবং অতিরিক্ত ব্যয়ের ঝামেলা আর থাকে না।

বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য সম্মানীভাতা পান। যদিও এ ভাতা অনেক সময় দায়িত্বের অংশ হিসেবেই দেওয়া হয়, তবু বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কমিশনের পক্ষ থেকে এই সম্মানীভাতাকে ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ উল্লেখ করে বাতিলের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। তাদের যুক্তি, মূল দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবেই এসব কাজ সম্পাদন করা উচিত, অতিরিক্ত সম্মানী বা ভাতার প্রয়োজন নেই।

নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাবিত সীমা অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন হবে ২৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন হবে ১,৫০,০০০ টাকা। এই প্রস্তাব অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে পে-কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। আজ কমিশনের সঙ্গে সমিতির নেতাদের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সাবেক গভর্নর ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পে-কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ রাখা হবে ডিসেম্বরে বাজেট সংশোধনের সময়। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, গেজেট প্রকাশের পরই এটি কার্যকর হবে এবং আগামী বছরের শুরু থেকেই সরকারি চাকরিজীবীরা নতুন কাঠামোর সুবিধা পেতে পারবেন।

নতুন জাতীয় বেতন স্কেল শুধুমাত্র অর্থ বৃদ্ধিই নয়, বরং সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও সাশ্রয়ের দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এতে কিছু চলমান সুবিধা বাতিল হওয়ার কারণে সরকারি মহলে বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ ও সরকারের সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, কোন সুবিধা থাকবে এবং কোনটি বাতিল হবে।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement