প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সভার মূল দিকগুলো তুলে ধরেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি জানান, গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদের মোট ৫১টি বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এসব বৈঠকের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনও সর্বশেষ সভায় পর্যালোচনা করা হয়।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, বৈঠকে আমদানি নীতি নিয়ে আলোচনা হলেও বিষয়টি আরও বিশদভাবে পর্যালোচনার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত পাঠানো ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের বিষয়ে আলাপ হয়েছে, যা নিয়েও পরবর্তী বৈঠকগুলোতে বাড়তি আলোচনা হবে।
টেলিযোগাযোগ সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠেছিল, কিন্তু তা নিয়েও আরও মতামত ও আলোচনার প্রয়োজন থাকায় বিষয়টি আপাতত মুলতবি রাখা হয়েছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বৈঠকে মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালান প্রতিরোধ ও দমন অধ্যাদেশের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভূমি ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
তিনি জানান, এতদিনে উপদেষ্টা পরিষদে মোট ২৫১টি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে এবং আলোচনায় এসেছে ৩৯৪টি বিভিন্ন বিষয়।
সভা শেষে আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, গণভোট আইন দ্রুত চূড়ান্ত হচ্ছে। তাঁর ভাষায়, “এই সপ্তাহেই কাজটি শেষ হয়ে যাবে, ধরুন তিন–চার কার্যদিবসের মধ্যেই হয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি ইতালিতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপনের কথাও ভাবছে সরকার।
ভারত সরকারের প্রতি দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দ্রুত প্রত্যর্পণের আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, হাসিনা ও কামালকে ফেরত আনার অনুরোধ জানিয়ে ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হচ্ছে। তাঁর মতে, বাংলাদেশের মানুষের ন্যায়বিচারের প্রত্যাশাকে সম্মান জানাতে ভারতের উচিত তাঁদের ফেরত পাঠানো।
তিনি আরও জানান, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। এর ফলে নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ এবং শৃঙ্খলার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের অধীনে চলে যাবে।
































