নারী দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেরা প্রতিপক্ষ

Published : ২২:২১, ৬ আগস্ট ২০২৫
আসন্ন নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল প্রস্তুতির দিক থেকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশ্বকাপের আগে অন্যান্য দলগুলো যখন আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলার সুযোগ পাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ নারী দল সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমনপরিস্থিতিতে বিকল্প হিসেবে বিসিবি আয়োজন করছে তিন দলের একটি চ্যালেঞ্জ কাপ টুর্নামেন্ট, যেখানে অংশ নেবে নারী দলের দুটি ইউনিট ও অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেদের জাতীয় দল। বিসিবির এই উদ্যোগকে জরুরি ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্টরা।নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১৩তম আসর বসবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়।
বাংলাদেশ নারী দল বাছাইপর্ব পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে মূল পর্বে। কিন্তু বাছাইপর্ব শেষ হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচের বাইরে রয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। যেখানে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বাকি সাতটি দল প্রস্তুতিমূলক আন্তর্জাতিক সিরিজে অংশ নিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের মেয়েরা পিছিয়ে পড়ছে ম্যাচ অনুশীলনের দিক থেকে। শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষ না পাওয়ায় বিসিবি আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজন করতে পারেনি। তবে বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে তিন দলের চ্যালেঞ্জ কাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১৮ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিতব্য এই টুর্নামেন্টে নারী দলের দুটি দল এবং ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দল অংশ নেবে। বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমূল আবেদীন ফাহিম বলেন, “শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করায় আমরা কোনো মানসম্পন্ন দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে পারিনি। ফলে আমরা যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এই ঘাটতি পূরণে আমরা চ্যালেঞ্জ কাপ ট্রফি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” বাংলাদেশ নারী দল ইতোমধ্যে কক্সবাজার ও সিলেটে এক মাসব্যাপী ক্যাম্প সম্পন্ন করেছে। সেখানে ফিটনেস, স্কিল ট্রেনিং, মানসিক প্রস্তুতি ও কন্ডিশনিংয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সিলেটের উইকেট কন্ডিশনে দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলন দলকে ম্যাচ উপযোগী করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিসিবি পরিচালক ফাহিম। তিনি বলেন, “আমরা একাধিক জায়গায় লম্বা প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছি। প্রথমে কক্সবাজারে ফিটনেস ট্রেনিং, পরে বিকেএসপি এবং তারপর সিলেটে স্কিল ক্যাম্প হয়েছে।
এভাবে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমরা মেয়েদের উন্নতি দেখেছি। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে বড় ধরনের অগ্রগতি এসেছে, যা আমাদের জন্য সবসময় দুর্বলতা ছিল।” ফাহিম আরও বলেন, “বোলিং সবসময়ই আমাদের গড়পড়তা বা তার চেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল। কিন্তু এবার সেটারও উন্নতি হয়েছে। ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও মেয়েরা আগের তুলনায় আরও বেশি মনোযোগী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের জায়গায় বড় পরিবর্তন এসেছে। মেয়েরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ফিট ও প্রস্তুত।” তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় কোচিং স্টাফের অধীনেই এই প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং তাদের কাজেও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
আগামী ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ নারী দলের ভারতে যাত্রা করার কথা রয়েছে। ২ অক্টোবর কলম্বোতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে টাইগ্রেসরা। বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলো ভারতের বিভিন্ন ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।আন্তর্জাতিক ম্যাচের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও বিসিবির বিকল্প উদ্যোগ ও নিবিড় প্রস্তুতি প্রক্রিয়া বাংলাদেশের নারী দলকে মানসিক ও কৌশলগতভাবে প্রস্তুত করেছে। চ্যালেঞ্জ কাপ টুর্নামেন্ট নারী দলকে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা দেবে। বিশ্বকাপের মঞ্চে আগের আসরগুলোর তুলনায় এবার ভালো কিছু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিসিবি কর্মকর্তারা। এবার টাইগ্রেসদের চোখ থাকবে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার দিকে।