ফুটবল ইতিহাসে ব্যক্তিগত স্বীকৃতির শীর্ষে থাকা ব্যালন ডি’অর দীর্ঘদিন ধরে খেলোয়াড়দের সাফল্যের প্রতীক হয়ে আছে। ফরাসি সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল ১৯৫৬ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। দীর্ঘ সময় ধরে এটি ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় বা উয়েফার বর্ষসেরা পুরস্কারের চেয়েও বেশি মর্যাদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তার ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে পাঁচবার এই পুরস্কার জিতেছেন—২০০৮, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে। ব্যালন ডি’অরের ট্রফি হাতে রোনালদোর ছবি ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে অমলিন। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এই পুরস্কারের প্রতি তার আগ্রহ অনেকটাই কমে গেছে এবং তিনি এখন এটিকে ‘মনগড়া’ বলে মনে করেন।
রোনালদোর এই মন্তব্যে ফুটবল অঙ্গনে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যালন ডি’অরের বিজয়ী নির্বাচনে পক্ষপাতিত্ব ও বাণিজ্যিক প্রভাব বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ থেকেই এই মন্তব্য এসেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করছেন, রোনালদো এখন ব্যক্তিগত স্বীকৃতির চেয়ে দলীয় অর্জন ও খেলার মানসিকতা নিয়েই বেশি মনোযোগী।
ব্যালন ডি’অর প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকদের ভোট, জাতীয় দলের অধিনায়ক ও কোচদের মতামতের পাশাপাশি কিছুটা জনপ্রিয়তার প্রভাবও থাকে। সমালোচকদের মতে, এই কারণে প্রকৃত সেরা পারফর্মার সবসময় পুরস্কৃত হন না। রোনালদোর বক্তব্য সেই বিতর্ককেই আরও উস্কে দিল।
যদিও রোনালদো তার বক্তব্যে ব্যালন ডি’অরের অতীত গুরুত্ব অস্বীকার করেননি, তিনি স্পষ্ট করেছেন যে বর্তমান সময়ে ফুটবলে তার কাছে দলের জয় ও সমষ্টিগত সাফল্যই প্রধান। তার এই মনোভাবের পেছনে সৌদি প্রো লিগে যোগ দেওয়ার পর নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ ও অভিজ্ঞতাও ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্ব ফুটবলে ব্যালন ডি’অর এখনো সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিগত পুরস্কার হলেও রোনালদোর মতো এক কিংবদন্তির সমালোচনা এর গ্রহণযোগ্যতা ও মর্যাদা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। আগামীতে এই পুরস্কারের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো পরিবর্তন আসে কি না, তা নিয়েই এখন আগ্রহ ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে।