নিষিদ্ধের পর নতুন রূপে শিবির: ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের চমক

Published : ১১:৪৮, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রদের দাবির প্রতি সাড়া দিয়ে প্রথম নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। বহু প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাস আবারও ছাত্ররাজনীতির প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। নানা নাটকীয় পরিস্থিতি পেরিয়ে অবশেষে আজ ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
গত ২৯ জুলাই উপাচার্যের ঘোষণা অনুযায়ী ডাকসু নির্বাচনের তপশিল প্রকাশ পায়। এরপর থেকেই ক্যাম্পাসে শুরু হয় নির্বাচনী আমেজ। সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া শুরু করলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জমে ওঠে নির্বাচনী তৎপরতা। এবারের নির্বাচনে ২৮টি পদে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী লড়ছেন। চমক নিয়ে হাজির হয়েছে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বাগছাস)।
ছাত্রদল এবার ভিপি পদে চমক দিয়েছে নিয়মিত ছাত্র ও জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকা আবিদুর রহমান আবিদকে মনোনয়ন দিয়ে। শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়ে মাঠের কর্মীকে প্রার্থী করা নিয়ে আলোচনায় এসেছে তারা। প্রচারণাতেও বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে নিজেদের আলাদা পরিচয় তুলে ধরেছে সংগঠনটি।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরও এবার ভিন্নভাবে হাজির হয়েছে। ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে তারা জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাদিক কাইয়ুমকে ভিপি পদে মনোনয়ন দেয়। শুধু তাই নয়, তাদের প্যানেলে নারী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, এমনকি জুলাই অভ্যুত্থানে চোখ হারানো শিক্ষার্থীর প্রার্থিতাও যুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাচন আদৌ হবে কি না এমন আশঙ্কা তৈরি হয় একাধিক রিটের কারণে। তবে আদালত রিট খারিজ করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে আশা জাগে। পরবর্তীতে নতুন রিট হলেও উচ্চ আদালত তাতে সাড়া দেননি। শেষ পর্যন্ত ২৫ আগস্ট প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। প্রার্থীরা ইশতেহার ঘোষণা, মতবিনিময় সভা ও প্যানেল পরিচিতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সমর্থন আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
এদিকে সম্ভাব্য কোনো অঘটন এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, সিসিটিভি নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।
দীর্ঘ বিরতির পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রত্যাশার মাত্রা আকাশচুম্বী। তাদের বিশ্বাস, নির্বাচিত প্রতিনিধি সত্যিকারের শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।
BD/AN