নেপালের প্রধানমন্ত্রী অলি যা লিখলেন পদত্যাগপত্রে

নেপালের প্রধানমন্ত্রী অলি যা লিখলেন পদত্যাগপত্রে ছবি : সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:০৩, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালে চলমান টানা বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ও সরকারি দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালীন কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দেওয়া তার পদত্যাগপত্র ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে।

পদত্যাগপত্রে অলি উল্লেখ করেছেন “মাননীয় প্রেসিডেন্ট, নেপালের সংবিধানের ৭৬(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি। এই কারণে সংবিধানের ৭৭(১)(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আজ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করছি।”

অলির পদত্যাগের দিনও নেপাল উত্তাল ছিল। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ উপেক্ষা করে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আগুন ধরিয়েছে। এমনকি পার্লামেন্ট ভবনেও প্রবেশ করে অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষ বিমান চলাচল স্থগিত করে। দেশের সেনাপ্রধান ও রাজনৈতিক নেতারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানায়। সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে মন্ত্রিসভা সদস্যদের সরিয়ে নিতে শুরু করে, কারণ তাদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

এই সহিংস বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল ৪ সেপ্টেম্বর সরকারের একটি সিদ্ধান্তকে ঘিরে। সেদিন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিবাদে প্রথমে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হলেও তা দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় রাজধানীতে কারফিউ জারি করা হয়। তরুণ প্রজন্ম এই আন্দোলনকে ‘জেন-জি রেভল্যুশন’ নামে অভিহিত করেছে।

গত দুই দিনের সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। এর আগে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যই পদত্যাগ করেছেন। সর্বশেষ চাপের মুখে পদ ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নিজেই।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement