দীর্ঘ ৮ বছর পর  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলন

দীর্ঘ ৮ বছর পর  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলন ছবি: বিজনেস ডেইলি

ঠাকুরগাঁও: প্রতিনিধি 

Published : ১৫:৪৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দীর্ঘ আট বছর পর  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলন। নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও সাংগঠনিক শক্তি পুনর্গঠনের উদ্দেশ্য সামনে রেখে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত সম্মেলন।দিনটি উৎসবমুখর করতে ইতোমধ্যে জেলা শহরে চলছে সাজ সাজ রব।

 সর্বশেষ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৭ সালে। নানা জটিলতা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সময়ের কারণে এতোদিন আর আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসছে জেলা বিএনপির এই সম্মেলন ঘিরে।

সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই মাঠজুড়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল স্টেজ। শ্রমিকরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। স্টেজের পাশাপাশি শহরের প্রধান সড়ক, মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টানানো হয়েছে অসংখ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার। শহরজুড়ে নেতাকর্মীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। চারদিকে সৃষ্টি হয়েছে উৎসব মুখর পরিবেশ।


দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের ডাক পেয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেই মনে করছেন, এ আয়োজন শুধু নেতৃত্ব বাছাইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি ভবিষ্যৎ আন্দোলন-সংগ্রামে নতুন গতি সঞ্চার করবে।

ঠাকুরগাঁও পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরীফ বলেন,“সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে অন্যান্য পদে যারা মনোনয়ন নিয়েছিলেন, তারা শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়িয়েছেন। আমরা চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক।”

ছবি: বিজনেস ডেইলি

জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. পয়গাম আলী জানান, “নেতৃত্ব বাছাই হোক ভোটের মাধ্যমে কিংবা সিলেকশনে—আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সম্মেলন সফল করতে চাই।”

অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন  বলেন,“সবার আগে বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছি। এটি হবে সফল ও ঐক্যবদ্ধ একটি আয়োজন।”

দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে নতুন কমিটি গঠনের মাধ্যমে সাংগঠনিক কাঠামোতে গতি এসেছে বলে জানাচ্ছেন নেতারা। এবার জেলার সর্বোচ্চ ফোরামের এই সম্মেলনকে ঘিরে পুরো জেলায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য।

২০১৭ সালের পর এত বড় রাজনৈতিক সম্মেলন আর হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ে। স্থানীয়দের মতে, এ আয়োজন শুধু একটি রাজনৈতিক রীতি পালন নয়। বরং জেলার রাজনীতিতে নতুন ধারা সঞ্চার করবে। বিশেষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি সুদৃঢ় করতে এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন পর এ সম্মেলন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার বড় সুযোগ। এর মাধ্যমে দল নতুন কর্মসূচি ও নেতৃত্বের দিক নির্দেশনা পাবে।

সম্মেলনে যোগ দিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আসবেন হাজারো নেতাকর্মী। অনেকেই জানিয়েছেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই সম্মেলন তাদের জন্য এক প্রকার উৎসবের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একজন তরুণ কর্মী বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরে এমন আয়োজনের অপেক্ষায় ছিলাম। এখন মনে হচ্ছে আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নতুন গতি পাবে।”

দীর্ঘ আট বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলন। নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের পাশাপাশি আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

BD/AN

শেয়ার করুনঃ
Advertisement