ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ৬৪ হাজার ৪০০-এর কাছে পৌঁছেছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। একই সময়ে আরও ৪০৯ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৩৬৮ এবং আহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৭৭৬।
গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের মর্গে ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৪৫ জনের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্বজনরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বহু হতাহত এখনও ধ্বংসস্তূপ ও রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
এ ছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ৩১ জন নিহত এবং ১৩২ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত খাদ্যসামগ্রী নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ২ হাজার ৪১৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৭ হাজার ৭০৯ জন আহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত এক দিনে অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন পাঁচ ফিলিস্তিনি। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত অনাহারজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮৭ জনে, যার মধ্যে ১৩৮ শিশু। মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে ২৪ লাখ মানুষ তীব্র দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন।
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেস ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) ইতিমধ্যেই উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। আশা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ সংকট মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়বে। আইপিসি ঘোষণার পর থেকে ১০৯ জন অনাহারে মারা গেছেন, যার মধ্যে ২৩ শিশু।
এদিকে, ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় গাজায় হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আরও ১১ হাজার ৯১১ জন নিহত এবং ৫০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। এতে জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভেঙে গেছে।
গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে ইসরায়েল এখন গণহত্যার মামলার মুখোমুখি আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)েও রয়েছে।
সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর