মাটির নিচ থেকে ১৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের জাপানি জাহাজ উত্তোলন

Published : ১৭:৪৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের তেঁতুলিয়া নদীতে ৩৩ বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি জাপানি জাহাজ মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ঠিকাদার বহুবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেও, শেষ পর্যন্ত খুলনার আনসার উদ্দিন মিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স অগ্রণী ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট’ সফলতা অর্জন করেছে।
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা প্রচেষ্টার পর মাটির ৭০ হাত তলদেশ থেকে ডুবে যাওয়া জাপানি পণ্যবাহী জাহাজটি উত্তোলন করে সকলকে অবাক করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালের আগস্টে চট্টগ্রাম থেকে বৈদ্যুতিক মালামাল নিয়ে এমভি মোস্তাবি নামে জাপানি জাহাজটি খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। পথিমধ্যে ঝড়ের কবলে পড়ে মেহেন্দিগঞ্জের আলীমাবাদ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মিঠুয়া এলাকায় তেঁতুলিয়া নদীতে জাহাজটি ডুবে যায়। তখন বিআইডব্লিউটিএ জাহাজ উদ্ধার করতে উদ্যোগ নিলেও সফল হয়নি।
সূত্র জানায়, জাহাজ ডুবির স্থানটি প্রায় দুই দশক আগে চর হিসেবে জেগে ওঠে এবং পরে সেটি মিঠুয়া গ্রাম নামে পরিচিতি পায়। ধীরে ধীরে সেখানে ফসল আবাদ ও বসতি গড়ে ওঠে। জাহাজ শনাক্ত ও উত্তোলনের জন্য একাধিক ঠিকাদার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০১৩ সালে বিআইডব্লিউটিএ পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে। খুলনার আনসার উদ্দিন মিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স অগ্রণী ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট’ সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকায় এই বিদেশি জাহাজটি উত্তোলনের অনুমতি পায়। এক যুগের বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে উত্তোলন করা সম্ভব হয়।
উত্তোলন কাজে যুক্ত আব্দুল মন্নান বলেন, “জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট, প্রস্থ ১৪ ফুট এবং উচ্চতা ১৭ ফুট। এটি ৫ একর মাটির ৭০ হাত খনন করে উত্তোলন করা হয়েছে। জাহাজের মধ্যে থাকা দামি যন্ত্রাংশের মধ্যে রয়েছে এমন একটি মেশিন, যা বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় না। থাকলেও নতুন মেশিনটির মূল্য আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকা। তবে বিকল মেশিন ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করলে ২০–২৫ লাখ টাকার মূল্য হবে।”
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান জানান, জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখন তা মিঠুয়া গ্রামে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে উর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
BD/AN