অবৈধ স্থাপনা ও সিএনজির বিরুদ্ধে নতুন আলটিমেটাম ডিসি সারওয়ারের

Published : ১৮:৪৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গড়ে ওঠা সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা আগামী সাত দিনের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, নগরীতে অনুমোদনবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল বন্ধ করতে হবে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে। নির্ধারিত সময়ের পর এসব অবৈধ যান চলাচল করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, “বর্তমানে সিলেট নগরীতে বৈধভাবে চলাচল করা সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার। কিন্তু এর বাইরে অনুমোদন ছাড়াই আরও বিপুল সংখ্যক সিএনজি সড়কে নেমে এসেছে। আমরা তাদের ১৫ দিনের সময় দিয়েছি। আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেসব সিএনজি লাইসেন্সবিহীন, সেগুলো নগরী থেকে সরিয়ে নিতে হবে। এগুলো উপজেলায় চলে যেতে পারে। কিন্তু শহরে থাকতে পারবে না। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে, জেল-জরিমানার পাশাপাশি প্রয়োজনে ডাম্পিং করা হবে।”
কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, “টার্মিনালের ভেতরে গাড়ি রাখার জায়গা থাকা সত্ত্বেও অনেকে বাইরে সড়কে গাড়ি পার্ক করেন। এটি অভ্যাসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু যদি তারা এ অভ্যাস না ছাড়ে, তাহলে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।”
অবৈধ পার্কিং সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি জানান, “শহরে পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে কোথায় কোথায় এটি করা সম্ভব তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু অনেক চালক নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে সড়কে গাড়ি দাঁড় করান, এতে তীব্র যানজট তৈরি হয়। তাই আমরা আগে তাদের সতর্ক করছি, পরে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
টার্মিনালের ভাঙাচোরা সড়ক নিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ চলমান থাকায় টার্মিনাল সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো বিশেষ বরাদ্দ আসছে না। ফলে সড়কের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা মেরামত করা যাচ্ছে না। আমরা ইতোমধ্যে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছি।”
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ বিলম্ব প্রসঙ্গে তিনি জানান, “জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতার কারণে কাজ ধীরগতিতে চলছে। তবে সম্প্রতি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিলেটে এসেছিলেন। আমরা বৈঠক করেছি এবং আশা করছি আগামী ২–৩ মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ, গ্যাসলাইনসহ অন্যান্য ইউটিলিটি স্থানান্তরের কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী ৫–৬ মাসের মধ্যে মহাসড়কের কাজ পুরোদমে শুরু হবে।”
এ সময় জেলা প্রশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, সিসিকের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ একলিম আবদীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, এর আগে সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সাদাপাথর ফেরত দিতে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন ডিসি সারওয়ার। গত ২৩ আগস্ট তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার কাছে যে সাদাপাথর থাকবে তা নিজ উদ্যোগে ও নিজ খরচে ফেরত দিতে হবে। সময়সীমার পর কারও কাছে ওই পাথর পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
BD/AN