লক্ষ্মীপুরে ২ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালতের স্টেনোটাইপিস্টের মামলা

লক্ষ্মীপুরে ২ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালতের স্টেনোটাইপিস্টের মামলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

Published : ১৬:০১, ১৬ জুন ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় ২ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তারা হলেন- আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমারান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (১৫ জুন) রাতে আহত আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

অভিযুক্ত আইনজীবী আশিক লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ও মিরাজ রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঈদের ছুটি শেষে রোববার আদালতের প্রথম কার্যদিবস ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত আইনজীবী মিরাজ ও আশিক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর এজলাসে আসেন।

একপর্যায়ে তারা চিৎকার করে জোরপূর্বক বিচারপ্রার্থীদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে অস্বীকার করেন। এতে অভিযুক্তরা এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেন ও পরে লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন।

এ সময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন তাদের বাধা দেন। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আশরাফুজ্জামানের মাথায় আঘাত করেন। আইনজীবী আশিকের আঘাতে তার বাম চোখের কোনায় রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে তার পরনের জামা ছিঁড়ে ফেলেন তারা। তাকে বাঁচাতে এলে জারিকারক সুমনও মারধরের শিকার হন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা করেন। এতে রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান ও ট্রাক চালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।

গত ৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়- মামলার বাদি আইনজীবী, এ জন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেয়নি।

আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনী সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি।

১০ জুন সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রোববার আইনজীবীরা আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে তারা এসে বাধা সৃষ্টি করেন। পরে তারা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান।

আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, ‘আদালত বর্জনের বিষয় জানাতে আমরা এজলাসে যাই। এ ঘটনা স্টেনোটাইপিস্টসহ কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমাকেই তারা প্রথম আঘাত করেছে। আমি কাউকে আঘাত করিনি।’

লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রফিক উল্যাহ বলেন, ‘আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাটি নিয়ে এখনো আমরা কোন সিদ্ধান্ত নিইনি। মামলা নিয়ে অফিসিয়ালভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা চাই না কোর্টের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হোক।’

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement