পুরুষের বন্ধ্যত্ব: কারণ ও প্রতিকারমূলক খাদ্যাভ্যাস

Published : ০০:০৮, ১ জুলাই ২০২৫
সন্তান না হওয়ার জন্য সমাজে সাধারণত নারীদের দায়ী করা হলেও চিকিৎসাবিজ্ঞানের তথ্য বলছে, পুরুষরাও সমানভাবে এই সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে দম্পতির সন্তান না হওয়ার প্রধান কারণ পুরুষের বন্ধ্যত্ব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষের বন্ধ্যত্বের প্রধান কারণ শুক্রাণু সংক্রান্ত সমস্যা। যেমন—শুক্রাণু তৈরি না হওয়া, পরিমাণে কম হওয়া, দুর্বল গতি বা ত্রুটিপূর্ণ গঠন, কিংবা সহবাসে সমস্যার কারণে শুক্রাণু নারীর দেহে না পৌঁছানো। অনেক সময় এর নির্দিষ্ট কারণ শনাক্ত না হলেও আধুনিক জীবনযাপন, দূষণ, ধূমপান, মদ্যপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত গরমে কাজ করা ইত্যাদি ঝুঁকি বাড়ায়। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, হরমোনের সমস্যা, কিছু ওষুধ ও চিকিৎসা (যেমন—কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি) শুক্রাণুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
অণ্ডকোষে সংক্রমণ, জন্মগত ত্রুটি বা আঘাতের কারণে শুক্রাণু তৈরি হলেও তা বীর্যে না মেশার সমস্যাও বন্ধ্যত্ব সৃষ্টি করতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে বাড়তে পারে শুক্রাণুর মান ও পরিমাণ। বিশেষজ্ঞরা নিচের কিছু খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন:
-
আনার: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সহায়ক, যা শুক্রাণুর মান উন্নত করে।
-
আখরোট: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই বাদাম শুক্রাণুর গতি ও শক্তি বাড়াতে কার্যকর।
-
ব্ল্যাক চকলেট: এতে রয়েছে এল-আরজিন অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
-
টমেটো: এতে থাকা লাইকোপেন উপাদান শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সাহায্য করে।
-
কুমড়োর বীজ: এতে থাকা জিংক ও ফাইটোসটেরল শুক্রাণুর উৎপাদন ও হরমোন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
শুক্রাণু বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত কিছু করণীয়:
-
ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন
-
অতিরিক্ত ওজন কমান, কারণ ফ্যাট বেশি হলে হরমোন ভারসাম্য নষ্ট হয়
-
গুরুতর চিকিৎসার আগে শুক্রাণু সংরক্ষণের চিন্তা করুন
-
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে আধুনিক প্রজনন প্রযুক্তি গ্রহণ করুন
পুরুষের বন্ধ্যত্ব এখন আর গোপন বা অব্যাখ্যাত কোনো বিষয় নয়। সচেতনতা, জীবনধারার পরিবর্তন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ সমস্যা অনেকটাই দূর করা সম্ভব। তাই সংকোচ না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।