কৃত্রিম রক্ত আবিষ্কারে বৈপ্লবিক সাফল্য, বদলে যাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ

কৃত্রিম রক্ত আবিষ্কারে বৈপ্লবিক সাফল্য, বদলে যাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ

TheBusinessDaily

Published : ০০:৫৬, ৭ জুলাই ২০২৫

দুর্ঘটনা, অস্ত্রোপচার বা দুর্লভ রক্তের অভাবে মৃত্যু যেন প্রতিদিনের বাস্তবতা। ঠিক সেই জায়গাতেই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে এসেছে জাপানি বিজ্ঞানীদের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার—কৃত্রিম রক্ত।

নারা মেডিকেল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হিরোমি সাকাইয়ের নেতৃত্বে শুরু হওয়া গবেষণায় এমন এক ধরনের কৃত্রিম রক্ত তৈরি হয়েছে, যা সব ধরনের রক্তের গ্রুপে নিরাপদে ব্যবহার করা যাবে। এটি শুধু যে সর্বজনীন, তা নয়—সংরক্ষণের দিক থেকেও এটি বিপ্লব আনবে। সাধারণ রক্ত যেখানে মাত্র ৪২ দিন সংরক্ষণযোগ্য, এই কৃত্রিম রক্ত রাখা যাবে প্রায় দুই বছর।

এই রক্ত তৈরি হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ দানকৃত রক্ত থেকে হিমোগ্লোবিন আলাদা করে, যা বিশেষভাবে সংরক্ষিত আবরণে মোড়ানো হয়। এতে তৈরি হয় ভাইরাসমুক্ত, কার্যকর কৃত্রিম লোহিত রক্তকণিকা।

চলতি বছরের মার্চে প্রথম ধাপের ক্লিনিকাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে, যেখানে ১৬ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ১০০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার পরিমাণ কৃত্রিম রক্ত প্রয়োগ করা হয়। গবেষকরা বলছেন, যদি সব ধাপ সফল হয়, তবে ২০৩০ সালের মধ্যেই চিকিৎসায় এর ব্যবহার শুরু হতে পারে।

প্রফেসর সাকাই বলেন, “লোহিত রক্তকণিকার এখনো কার্যকর বিকল্প নেই। এই প্রযুক্তি বাস্তবায়ন হলে তা শুধু জরুরি চিকিৎসা নয়, মানবিক সংকটেও প্রাণরক্ষার হাতিয়ার হয়ে উঠবে।”

এই উদ্ভাবনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসা মহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে কেউ এটিকে “নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য” বলে আখ্যা দিচ্ছেন, কেউ বলছেন, “এটাই ভবিষ্যতের চিকিৎসাব্যবস্থার বড় হাতিয়ার।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রযুক্তি সাশ্রয়ী হলে তা শুধু উন্নত দেশেই নয়, উন্নয়নশীল দেশগুলোর হাসপাতাল ও জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্রেও বিপুল প্রভাব ফেলবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও একই ধরনের প্রকল্পে এগিয়ে যাচ্ছে। “এরিথ্রোমার” নামে কৃত্রিম রক্ত তৈরির একটি প্রকল্পে ডিএআরপিএ এরইমধ্যে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডকে ৪৬ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে।

উপসংহার:
বিশ্বজুড়ে রক্তের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে, অথচ জোগান ও সংরক্ষণের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম রক্তের কার্যকর, নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী বিকল্প আবিষ্কার নিঃসন্দেহে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি। সফল বাস্তবায়ন হলে, এটি শুধু রক্তের সংকটই দূর করবে না, বদলে দেবে মানবসভ্যতার চিকিৎসা-ভিত্তিক ভবিষ্যৎ।

প্রয়োজনে এই প্রতিবেদনকে আরও তথ্যভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত বা ওয়েবভিত্তিক বিন্যাসে সাজিয়ে দেওয়া যাবে। জানান, আমি প্রস্তুত।

BD/Sk

শেয়ার করুনঃ
Advertisement