“ভোটে জিততে টাকা–অস্ত্র–কমিশনকে ব্যবহার করছে বিজেপি”—মমতা

Published : ১১:৩২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সৃষ্টি হয় ব্যাপক অস্থিরতা। বিষয়টি ছিল বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের প্রতি অপমান এবং হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশন।
সেদিন আলোচনায় বক্তব্য দিতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলে সঙ্গে সঙ্গেই হট্টগোল শুরু করে বিজেপি বিধায়করা। তাদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে মাঠে নামে তৃণমূলের বিধায়করা। উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে মমতা নিজ আসন ছাড়তে বাধ্য হয়ে ওয়েলে নেমে আসেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করে স্পিকার। কিন্তু তার পরও তীব্র বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এমনকি বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক ও বিধানসভার মার্শালদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই মমতা তার বক্তব্য চালিয়ে যান এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ ও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান। তিনি এই ঘটনাকে বিধানসভার জন্য “কালো দিন” বলে আখ্যা দেন।
মমতা অভিযোগ করেন, বিজেপি তার বক্তৃতা বন্ধ করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হট্টগোল করছে। তিনি বলেন, “আমি বাংলায় কথা বললে মানুষের সামনে ওদের মুখোশ খুলে যাবে, তাই আমার কণ্ঠ রোধের চেষ্টা হচ্ছে।” তিনি বিজেপিকে দুর্নীতিবাজ, ভোট চোর, গদি চোর আখ্যা দিয়ে বলেন, “বাংলা ভাষা ও বাঙালির উপর সন্ত্রাস চালিয়ে বাংলায় জেতা যাবে না।”
বক্তৃতার সময় বিজেপি বিধায়কদের উদ্দেশে মমতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কাগজ ছোড়া, হাততালি দিয়ে বক্তৃতা ব্যাহত করা সম্পূর্ণ অসংসদীয় ও বেআইনি আচরণ। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি টাকা, অস্ত্র ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে ভোটে জয়ী হয়।
এক পর্যায়ে মমতা প্রকাশ্যে স্লোগান দেন “মোদি চোর, বিজেপি চোর, অমিত শাহ চোর” এবং উপস্থিত তৃণমূল বিধায়কদেরও একই স্লোগান তুলতে আহ্বান জানান। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলার মানুষ একদিন বলবে, বিজেপিকে আর বাংলায় দেখতে চায় না।
শেষ পর্যন্ত তীব্র বিতর্ক আর হট্টগোলের মধ্যেই মমতার বক্তব্য শেষ হয়। তার পরপরই বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করে বিজেপি বিধায়করা।
BD/AN