ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদেকে জেনে-বুঝে সিদ্বান্ত নিতে হবে-ডা.শফিকুর রহমান

Published : ১৬:২৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আলস্নাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি নিয়ে সকল কাজ করতে হবে -ডা.শফিকুর রহমান।
অতীতে যারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুন্ঠন করে নিজেরা অর্থ-বিত্তের পাহাড় গড়েছেন জনগণকে তাদের হাতে ক্ষমতার চাবি তুলে না দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি আজ সকাল ১০.৩০টায় রাজধানীর মনিপুর স্কুল এন্ড কলেজ, ইব্রাহিমপুর, ব্রাঞ্চ-০২-এলাকায় ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের কাফরম্নল থানা দক্ষিণ আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানা আমীর অধ্যাপক আনোয়ারম্নল করিমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহিদুলস্নাহ ও শাহ আলম তুহিন প্রমূখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত, আর্ত-মানবতার কল্যাণ-মুক্তিই আমাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। আমরা নেতিবাচক ধারার রাজনীতি পরিবর্তন করে দেশে ইতিবাচক ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার বিরামহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
আমরা দেশ ও জাতিকে এমন একটি সমাজ উপহার দিতে চাই, যে সমাজে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। রাষ্ট্র কারো সাথে কোন ভাবেই বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। দেশ হবে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসন মুক্ত। আমরা যে আমাদের প্রতিশ্রম্নতি পালনে পুরোপুরি সক্ষম তা আমাদের দু’জন মন্ত্রী স্বার্থকভাবে প্রমাণ করে গেছেন।
তারা ছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, সৎ, যোগ্য ও অধিকতর দক্ষ। তাই সে কাক্সিড়্গত সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগামীতে ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে’। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপস্নবের মাধ্যমে আমাদের জন্য অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু শঙ্কাটাও পুরোপুরি কেটে যায় নি। তাই আমাদেরকে খুবই সতর্ক অগ্রসর হতে হবে।
রাজনীতিতে মূল্যবোধের চর্চার প্রসঙ্গ তুলে আমীরে জামায়াত বলেন, আগামীতে যারা যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদেরকে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আলস্নাহর কাছে জবাবদিহীর অনুভূতি নিয়ে সকল কাজ সম্পাদন করতে হবে। কারণ, সকলকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হলেও আলস্নাহকে ফাঁকি দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
আমরা এমন এক ইনসাফপূর্ণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নারী ও পুরম্নষ নির্বিশেষে সকলেই সকল প্রকার ভয় ও শঙ্কামুক্ত থাকবেন। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণকে ভয়ভীতিমুক্ত পরিবেশ উপহার দিতে পারেন নি। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে জেনে-বুঝে আগামীর বাংলাদেশের জন্য সিদ্ধাšত্ম গ্রহণ করতে হবে।
জনগণ সত্যের পক্ষে রায় দিলে ৫ বছরের মধ্যেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করা সহ ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব’। তিনি সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘দেশীয় চিকিৎসায় যাতে সাধারণ মানুষ আস্থা রাখেন এবং চিকিৎসরাও নিজেদের প্রতি আস্থা ফিরে পান সে জন্যই আমি দেশেই চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধাšত্ম গ্রহণ করেছি। মূলত, সুস্থতা-অসুস্থতা আলস্নাহর হাতে।
আমারা দেখেছি, বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই কফিন বন্দী হয়ে ফিরছেন। আবার দেশেই চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই পূর্ণ সুস্থ্যতা লাভ করছেন। তাই আলস্নাহ চাইলে সব জায়গায় তার বান্দাদের সুস্থ রাখতে পারেন। চিকিৎসা বা চিকিৎসক উসিলা মাত্র। মূলত, আলস্নাহ যাতে সুস্থ রাখতে চান, চিকিৎসকের উসিলায় তাকে সুস্থ্য রাখেন। তাই দেশীয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে আমি দেশেই চিকিৎসা গ্রহণ করেছি। এতে দেশীয় চিকিৎসকরাও উজ্জীবিত হবেন। কারণ, সাধারণ মানুষের পক্ষে বিদেশে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণ সম্ভব নয়’।
আমীরে জামায়াত বলেন, ‘চিকিৎসা একটি মহান ও সেবামূলক পেশা। তাই চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে সকল শ্রেণির মানুষের চিকিৎসা করতে হবে। দেশের চিকিৎসার মান উন্নয়নের জন্য চিকিৎসা বিষয়ক শিক্ষাকে বৈশ্বিক মানসম্পন্নকরণ এবং দেশীয় হাসপাতালগুলো সর্বাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামে সমৃদ্ধ করা জরম্নরি। একই সাথে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে রম্নগীবান্ধব সেবা প্রদান করাও দরকার। দেশীয় চিকিৎসায় সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে চিকিৎসা সহজলভ্য ও উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই দেশীয় চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে’।
BD/AN