ভারতের সব নাগরিককে ‘হিন্দু’ বললেন আরএসএস প্রধান

ভারতের সব নাগরিককে ‘হিন্দু’ বললেন আরএসএস প্রধান ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৮:৪৪, ১০ নভেম্বর ২০২৫

ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগওয়াত সম্প্রতি এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতে বসবাসকারী সবাই—বর্ণ বা ধর্ম নির্বিশেষে—‘হিন্দু’।

রোববার (৯ নভেম্বর) বেঙ্গালুরুর একাধিক জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় এই মন্তব্য করেন তিনি। আরএসএস এবং তাদের ঘোষিত ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ ধারণা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভাগওয়াত বলেন, মুসলিম বা খ্রিস্টান—যে কোনো ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি চাইলে আরএসএসে যোগ দিতে পারেন, তবে তাদেরকে আলাদা ধর্মীয় পরিচয় ছেড়ে ‘হিন্দু’ হিসেবেই আসতে হবে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “‘হিন্দু’ মানে ভারত মাতার সন্তান। মুসলিম, খ্রিস্টান বা অন্য যে কোনো ধর্মের মানুষ হতে পারেন, কিন্তু আরএসএসের শাখায় অংশ নিতে হলে তাদের ভারত মাতার সন্তান হিসেবে, অর্থাৎ হিন্দু সমাজের সদস্য হিসেবেই আসতে হবে।”

আরএসএস দীর্ঘদিন ধরেই ‘হিন্দু’ শব্দটিকে শুধু ধর্ম নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও জাতীয় পরিচয় হিসেবে তুলে ধরছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংজ্ঞা তাদের হিন্দু রাষ্ট্রের ধারণাকে রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তোলে এবং সংখ্যালঘু বিরোধী অভিযোগ থেকে দূরে থাকার সুযোগ দেয়।

ভাগওয়াত জানান, মুসলিম ও খ্রিস্টানরা অনেক সময় আরএসএসের শাখায় অংশ নেন, কিন্তু সেখানে ধর্মীয় পরিচয়ে কাউকে আলাদা করা হয় না, এমনকি তাদের ধর্ম সম্পর্কে প্রশ্নও তোলা হয় না। সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আস্থা গড়ে তোলার জন্য সংস্থা বিভিন্ন আউটরিচ প্রোগ্রাম চালালেও, কোনো বিশেষ সুবিধা দেয় না।

তার ভাষায়, “সংস্থা কাউকে বিশেষ কিছু দেয় না। প্রত্যেকে নিজের দায়িত্ব পালন করবে, আরএসএস শুধু মানুষ গড়ার কাজ করে।”

আরও বলেন, ভারতে কোনো ‘অহিন্দু’ নেই। “সব মুসলিম ও খ্রিস্টান একই পূর্বপুরুষের বংশধর। তারা হয়তো তা জানে না বা ভুলে যেতে বাধ্য হয়েছে। প্রত্যেক হিন্দুর বোঝা উচিত—হিন্দু হওয়া মানে ভারতীয় দায়িত্ব পালন করা।”

নারী শাখা ‘সেবিকা ভারতী’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভাগওয়াত বলেন, “আরএসএস সময়ের সঙ্গে কিছু পরিবর্তন আনতে পারে, কিন্তু মূল নীতি—‘হিন্দু রাষ্ট্র’—কখনো পরিবর্তন হবে না।”

এছাড়া সংগঠনের ভাঙওয়া (গেরুয়া) পতাকা ব্যবহারের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আরএসএস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৫ সালে, আর ভারতের জাতীয় পতাকা নির্ধারিত হয় ১৯৩৩ সালে। পতাকা কমিটি ভাঙওয়া পতাকাকেই সুপারিশ করেছিল। আমরা সবসময় ত্রিবর্ণ পতাকাকে সম্মান জানাই।”

শেষে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ভাগওয়াত বলেন, “আরএসএস রাজনীতি নয়, নীতি সমর্থন করে। বিজেপিকে সমর্থন করা হয়েছে কারণ তারা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের দাবিকে সমর্থন করেছিল।”

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement