যেসব রোগের উপশম করে আঁশফল

Published : ২২:৫৪, ২৪ জুন ২০২৫
আঁশফলের আরেক নাম কাঠলিচু। গ্রীষ্মকালে বাজারে যখন লিচুর উপস্থিতি কমতে থাকে তখন এ ফল পাকতে শুরু করে। তবে লিচুর মতো বাজারে ততটা দেখা না গেলেও ফলটি একদিকে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকরও।
পাকা আঁশফলে ১.৪২ শতাংশ প্রোটিন ও ৪৫ শতাংশ চর্বি আছে। সে কারণে যে কোনো দুর্বলতায় ভুগলে চার-পাঁচ চা চামচ ফলের রস প্রতিদিন সকালে বা বিকেলে একবার খেলে দুর্বলতা কমে যাবে।
ফলের খোসায়ও একই ধরনের খাদ্যপ্রাণ থাকায় যে মৌসুমে পাকা ফল পাওয়া যায়, সে সময় এ খোসার গুঁড়া মিহি করে এক কাপ গরম দুধে মিশিয়ে ছেঁকে একবার করে খেলে শরীরে কর্মশক্তি ফিরে আসবে।
অগ্নিমান্দ্য আপাতদৃষ্টিতে রোগ মনে না হওয়ায় অনেকেই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেন না। এ ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ রোগের জন্য এক গ্রাম পরিমাণ আঁশফলের গুঁড়া প্রতিদিন খাওয়ার এক ঘণ্টা পরে হালকা গরম পানিসহ খেলে উপশম হবে।
গুঁড়াকৃমির উপদ্রব দেখা দিলে বয়সের ওপর ভিত্তি করে আধা থেকে এক চা চামচ ফলের গুঁড়া হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খালি পেটে একবার প্রয়োজনে দু'বার করে কয়েকদিন খেলে উপদ্রব আর থাকবে না।
আকস্মিক পাতলা পায়খানা ও বমি হলে এবং প্রস্রাব কম হলে আঁশফলের রসে উপকার পাওয়া যায়। দু-তিন চা চামচ পরিমাণ রস দু'বার ৩ ঘণ্টা অন্তর খাওয়ালে ডায়রিয়ার উপশম হবে। আঁশফলের ছালে ট্যানিনের পরিমাণ ১২.৩ শতাংশ।
এ ট্যানিন ক্ষতস্থানের কোষের বহিস্থ আমিষকে অধঃক্ষেপিত করে একটি পাতলা আবরণ তৈরি করে এবং ক্ষতস্থান সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। সে কারণে ছাল ছেঁকে কোনো ক্ষতে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
আঁশফলের (ঊঁঢ়যড়ৎরধ ষড়হমধহধ) গাছ ও পাতা লিচুগাছের মতোই। গাছটি ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পত্রদণ্ডে ৫-৭টি পত্রক থাকে; পত্রক ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা ও ৭ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। ফুলের কুঁড়ি হলুদ ও সাদা রঙের। ফেব্রুয়ারি-মার্চে ফুল এবং মে-জুনে ফল হয়। ফল অনেকটা ছোট আকারের লিচুর মতো।
তবে খোসা আঁশজাতীয়। উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে আঁশফলের আদি আবাস মালয় উপদ্বীপ। বাংলাদেশে এটি স্বল্পপরিমাণে চাষ করা হয়।
বিডি/ও