কাঁঠালের বীজ চুল পড়া ও মানসিক উদ্বেগ কমায়

Published : ২০:২৪, ২৬ জুন ২০২৫
বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। শুধু কাঁঠালের শাঁসই নয়, এর বীজেও আছে অনেক উপকারিতা।১০০ গ্রাম কাঁঠালের বীজে থাকে ১৮৫ গ্রাম ক্যালোরি, ৭ গ্রাম প্রোটিন, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১.৫ গ্রাম ফাইবার। অন্যদিকে কাঁঠালের বীজে ১ গ্রামেরও কম চর্বি থাকে। এই মৌসুমে অল্প খরচে শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে কাঁঠালের বীজ একটি আদর্শ খাবার। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন, ফসফরাস এবং ডায়েটারি ফাইবার।
মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রের সুস্থতায় কাঁঠালের বীজে থাকা আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্য উন্নত করে। মস্তিষ্কের কোষের কার্যকারিতা বাড়াতেও আয়রন অপরিহার্য, যা স্মৃতিশক্তি ও কগনিটিভ ফাংশনকে শক্তিশালী করে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ভিটামিন-এ কাঁঠালের বীজে বিদ্যমান ভিটামিন-এ চোখের রেটিনার স্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে এবং চোখের বিভিন্ন রোগ, যেমন – ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও ক্যাটারাক্টের ঝুঁকি, কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা ও বলিরেখা দূরীকরণ কাঁঠালের বীজে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস (যেমন- ফ্ল্যাভোনয়েডস ও ফেনোলিক কম্পাউন্ডস) ত্বকের ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজ কমায়, যা বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে সহায়ক। দুধ ও মধুর সঙ্গে কাঁঠাল বীজের পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল হয়। এছাড়া, এতে থাকা ভিটামিন-সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।
রক্তাল্পতা দূরীকরণ আয়রনের ঘাটতিজনিত অ্যানিমিয়া (রক্তশূন্যতা) রোধে কাঁঠালের বীজ খুবই কার্যকর। এটি হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেহের সমস্ত কোষে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে, ফলে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর হয়।
ঐতিহ্যবাহী যৌন স্বাস্থ্য চিকিৎসায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কাঁঠালের বীজকে প্রাকৃতিক অ্যাফ্রোডিজিয়াক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে থাকা জিংক ও আয়রন পুরুষ ও নারী উভয়ের প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।
ত্বকের আর্দ্রতা ও রোগ প্রতিরোধ কাঁঠালের বীজ ত্বকের শুষ্কতা দূর করে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা প্রদান করে। এছাড়া, এটি এক্সিমা, ব্রণ ও অন্যান্য ত্বকের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক কাঁঠালের বীজে থাকা অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই বীজে উপস্থিত বায়োঅ্যাক্টিভ কম্পাউন্ডস বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিহত করতে সক্ষম। রোগের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে নিয়মিত কাঁঠালের বীজ খাওয়া উপকারী।