রংপুর মহান বিজয় দিবস পালিত

রংপুর মহান বিজয় দিবস পালিত ছবি: সংগৃহীত

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১৯:৫৬, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতির অহংকার ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা, গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রংপুরে পালিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেন।

দিবসের শুরুতেই প্রথম প্রহরে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী, রংপুর জেলা প্রশাসক মো. এনামুল আহসান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। আজ ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে স্টেডিয়ামে।

পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রংপুর স্টেডিয়ামে জড়ো হয়। রংপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও আলোচনা সভা। দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের অহংকার। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ইতিহাস বিকৃতি রোধ করে সত্য ও সঠিক তথ্য জানাতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শেই একটি শক্তিশালী, মানবিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে। একই সঙ্গে সামনে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, সেই লক্ষ্যে প্রশাসন আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে। সবার সহযোগিতায় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।

রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বিজয় দিবস আমাদের শৃঙ্খলা, দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের শিক্ষা দেয়। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সমাজের নৈতিক দায়িত্ব।

রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল আহসান বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খাকে ধারণ করে একটি বৈষম্যহীন, উন্নত ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পরে রংপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় দিবসের অন্যতম আকর্ষণ বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরাও কুচকাওয়াজে অংশ নেন। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তারা অংশগ্রহণকারী দলগুলোর শৃঙ্খলা, দক্ষতা ও প্রস্তুতির প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানজুড়ে বিজয়ের গান, দেশাত্মবোধক স্লোগান ও জাতীয় পতাকার রঙে ছেয়ে যায় রংপুর স্টেডিয়াম।

সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে বিজয় দিবসের উৎসবমুখর পরিবেশ আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে রংপুরবাসী নতুন করে শপথ নেয়-মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার।

বিডি/এএন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement