ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মহান বিজয়ের ৫৪ বছর অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ ৫৫ বছরে পদার্পণ করেছে। এই দীর্ঘ সময়ে দেশ অনেক অগ্রগতি অর্জন করলেও প্রত্যাশা ও বাস্তব প্রাপ্তির মধ্যে এখনও বিস্তর ব্যবধান রয়ে গেছে।
তার ভাষায়, গত ৫৪ বছরে আমরা বহু অর্জনের সাক্ষী হয়েছি, তবে যে স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিয়ে স্বাধীনতা এসেছিল, তার তুলনায় প্রাপ্তি এখনও পর্যাপ্ত নয়।
সোমবার সকালে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার উত্তর ঝাপুয়ায় আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদ্রাসার দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান এবং আল-ঈমান স্মারক-২ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল জুলুম, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক সাহসী সশস্ত্র প্রতিরোধ। তিনি উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পর এই ৫৪ বছরে অনেক অর্জন এলেও আমরা প্রত্যাশিত মাত্রায় নৈতিক ও মানবিক উন্নতি করতে পারিনি। ভালো মানুষ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে আমাদের ঘাটতি রয়ে গেছে। এ সময় তিনি চুরি, লুটপাট, দুর্নীতি, নারী নির্যাতনসহ দেশের স্বার্থবিরোধী সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে চরিত্রবান নাগরিক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে একটি আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত করতে হলে সম্মিলিতভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দায়িত্ববোধ, সততা ও নৈতিকতার চর্চা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে বা আমাদের কিছু আগে-পরে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আজ সেসব দেশ উন্নয়নের বহু সূচকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তাদের জিডিপি, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ নানা সূচক সত্যিই ঈর্ষণীয়। অথচ আমাদের দেশে এখনও এমন মানুষ আছে, যারা দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি বানায়। তিনি এ ধরনের ব্যক্তিদেরকে দেশের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
নারী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে নারীরা যুগে যুগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে সামাজিক উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। এমনকি যুদ্ধের ময়দানেও নারীরা সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধেও নারীদের অসামান্য ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। তাই নারী শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়নে সবাইকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদের ডিন এবং আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ রশীদ জাহেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের জামিয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়ার প্রধান পরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ফুরকানুল্লাহ খলীল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবুল হাশেম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু জাফর মজুমদার, থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবর রহমান এবং মাদ্রাসার বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য এখলাসুর রহমানসহ অন্যান্য অতিথিরা।
অনুষ্ঠান শেষে ধর্ম উপদেষ্টা চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার দেওদীঘিতে নির্মাণাধীন ইসলামিক মিশন সেন্টার পরিদর্শন করেন।



























