জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সমঝোতার আওতায় বিএনপি দলটিকে চারটি সংসদীয় আসন ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন দলের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে সিলেট-৫ আসনে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, নীলফামারী-১ আসনে মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, এসব আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দেবে না এবং দলের এই সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে চলতে হবে। কেউ যদি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জমিয়তের প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে তাদের দলীয় প্রতীক ‘খেজুর গাছ’ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে একমাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলামই এবার বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় এসেছে। শুরুতে দলটির প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি আসনের, যা নিয়ে কিছুটা টানাপোড়েনও তৈরি হয়েছিল। তবে আলোচনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা চূড়ান্ত হয়। এর ফলে সারাদেশে জমিয়তের অন্যান্য প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন।
জমিয়তের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম যে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছে, তা আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন জানানো হচ্ছে এবং আমরা দোয়া করি, তাদের এই উদ্যোগ সফল হোক।
দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন একটি মহল নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তিনি দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিএনপির প্রত্যাশা ছিল সরকার এই কয়েক মাসে আরও দক্ষতা ও কার্যকারিতার পরিচয় দেবে।
তবে সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারকে আরও সতর্ক, ইতিবাচক এবং কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। নির্বাচন যেন একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়—এটাই বিএনপির প্রত্যাশা।































