রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) হাসপাতালের আশপাশে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে বিজিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দায়িত্বরত বিজিবি কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, মোট দুই প্লাটুন সদস্য মোতায়েন রয়েছে—এক প্লাটুন সরাসরি হাসপাতালের গেটে দায়িত্ব পালন করছে এবং অন্য প্লাটুন টহল কার্যক্রমে নিয়োজিত।
এর আগে সোমবার রাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যারিকেড বসায়। তবুও বুধবার সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির অসংখ্য নেতা–কর্মী হাসপাতালে এসে জড়ো হতে শুরু করেন। ব্যারিকেডের বাইরে নির্দিষ্ট এলাকায় তারা অবস্থান করছেন।
অনেক নেতা–কর্মী জানান, ভিড় এড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও উদ্বেগের কারণে তারা হাসপাতালে আসা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেননি।
খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করার পর স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) তার নিরাপত্তা দায়িত্ব গ্রহণ করে। মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে এসএসএফ আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু করে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনি জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসা শুরু হলেও পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হলে তাকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। বর্তমানে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় খালেদা জিয়া কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয় এবং পরে প্রতি ছয় মাসে সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি তিনি পাননি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট তিনি মুক্তি লাভ করেন। এরপর ৮ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান এবং সাড়ে চার মাস পর ৬ মে দেশে ফিরে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।


































